বিনোদন

জামিন পেয়ে যা বললেন পরীমনি

ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। আজ সোমবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পেয়ে নিজের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এটা মিথ্যা মামলা। আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।

এদিন সকাল ১০টায় তিনি আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে জামিন পেয়ে তিনি আদালত চত্বর ছাড়েন।

এর আগে রবিবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় তার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। এ ছাড়া আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ধার্য ছিল।

তবে অসুস্থ থাকায় পরীমনি আদালতে হাজির হননি। এ জন্য তার আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে বাদীপক্ষ অভিযোগ গঠন শুনানির পক্ষে আবেদন করেন। আদালতে সময়ের আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ২০ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়। একই সঙ্গে পরীমনির জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

এর আগে নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর সত্যতা পেয়ে গত বছরের ১৮ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলার পিবিআই পরিদর্শক মো. মনির হোসেন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে পরীমনিসহ জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মেলেনি। 

পরে একই বছরের ১৮ এপ্রিল আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে পরীমনিকে হাজির হতে সমন জারি করেন। পরে গত ২৬ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান পরীমনি। এর আগে ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির উদ্দিন মাহমুদ।

তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআই উল্লেখ করে, ২০২১ সালের ৮ জুন দিবাগত রাতে আসামি পরীমনি অসৎ উদ্দেশ্যে বাদী নাছির মাহমুদকে ফাঁদে ফেলে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করে ঢাকা বোট ক্লাবের নিয়ম উপেক্ষা করে ফ্রিতে তিন লিটারের ব্লু লেবেল মদ পার্সেল নিতে না পেরে বাদীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি প্রদান করেন। পরীমনি ইচ্ছাপূর্বকভাবে বাদীর দিকে অ্যাশট্রে ছুড়ে মেরে তার ডান কানের ওপর মাথায় আঘাত করে নিলাফুলা জখম করেন।

এ ছাড়া আসামিদের ছোড়া ভাঙা গ্লাসের টুকরায় বাদীর বুকে লাল চিহ্নিত স্ক্র্যাচ মার্ক যুক্ত জখম করে ও ক্লাবের বারের ভেতরে যত্রতত্র গ্লাস, কাচের বোতল অ্যাশট্রে ইত্যাদি ছুড়ে ফেলে তাণ্ডব করে। যার ফলে আসামি পরিমনির বিরুদ্ধে বাদীর আনা অবিযোগ ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধ করেছে মর্মে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বারের ভেতরে তাণ্ডব করতে থাকলে সাক্ষী তুহিন সিদ্দিকিকে বাদী নাছির আসামিদের নিয়ে বার থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। তখন আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমি তেড়ে এসে বাদী নাছির মাহমুদকে গালমন্দ করতে করতে এবং হুমকি প্রদর্শনপূর্বক দুই-তিনটা কিল-ঘুষি মারেন। এতে আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে বাদীনির আনা অভিযোগ মতে ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি ফাতেমা-তুজ-জান্নাত বনি ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে বাদীর আনা কোনো অভিযোগের সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker