শোবিজ অঙ্গনের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া। নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে তিনি সবার মনে জায়গা করে নিয়েছেন। এখন পর্দায় নিয়মিত না দেখা গেলেও অভিনয়ের জন্য বরাবরই দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়ে এসেছেন তিনি। মাসখানেক যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন অভিনেত্রী।
কিছুদিন আগে দেশে ফিরেছেন। ফিরেছেন ক্যামেরার সামনেও। নাটক-বিজ্ঞাপনে অভিনয় করছেন, অংশ নিচ্ছেন শোবিজের বিভিন্ন আয়োজনেও। তার সাম্প্রতিক ব্যস্ততার খবর নিয়েছেন কামরুল ইসলাম।
যুক্তরাষ্ট্র সফর
নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার কিংবা স্ট্যাচু অব লিবার্টি, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আইকনিক স্থান থেকে ছবি তুলে পোস্ট করছিলেন স্পর্শিয়া। আনন্দময় সেই সফর আপাতত শেষ করে কিছুদিন আগে ফিরেছেন অভিনেত্রী। বলেন, ‘আমার পরিবার ওখানে থাকে। আবার আমি যাকে বিয়ে করেছি, তার পরিবারও যুক্তরাষ্ট্রে থাকে।
ফলে এখন বাংলাদেশ টু যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া-আসার মধ্যেই থাকব। যখন কাজ থাকবে, দেশে আসব। এরপর আবার যুক্তরাষ্ট্রে। এভাবেই শিডিউল করছি আর কী। তবে আমার জন্য দেশে থাকাই স্বাচ্ছন্দ্যের।
ভ্রমণপ্রিয় স্পর্শিয়া
দিন কয়েক আগে ফেসবুকে লাল শাড়িতে বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন স্পর্শিয়া। পাহাড়ভূমি বান্দরবানে ধারণ করা ছবিগুলো। অনেকে ভেবেছেন, দেশে ফিরেই পাহাড়ে ছুটে গেছেন অভিনেত্রী। তবে তিনি বললেন ভিন্ন কথা, ‘এগুলো আরো আগের ছবি। আসলে আমরা যখন যেখানে থাকি, সেখান থেকে ছবি তো কমই পোস্ট করি। ওই জায়গা থেকে ফিরে আসার পরই পোস্ট করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকার জন্যও ছবি পোস্ট করতে হয়। তবে ব্যক্তিগত জীবনে কোথায় যাচ্ছি, কী করছি, সেটা একান্ত নিজের কাছেই রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আই এম আ সিম্পলি প্রাইভেট পারসন। তবে হ্যাঁ, আই লাভ ট্রাভেলিং। সারা বছরই ঘোরার মধ্যে থাকি।’
নতুন কাজ
দেশে ফিরে একাধিক কাজ করেছেন স্পর্শিয়া। এর মধ্যে রয়েছে নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র ও সিনেমা। তবে কাজগুলোর তথ্য আপাতত প্রকাশ করা বারণ। স্পর্শিয়ার ভাষ্য, ‘যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক মাস থাকার প্ল্যান ছিল। তবে কাজের শিডিউল থাকায় এক মাস পরই ফিরে এসেছি দেশে। ফিরে নাটকে অভিনয় করলাম অনেক বছর পর। বিস্তারিত বলতে পারছি না এখনই। ওদের তো প্রচারণার প্ল্যান আছে। এর আগে বলাটা ঠিক হবে না। আবার ছবিও আছে পাইপলাইনে। যখন যেটা রিলিজ হবে, ওই সময় জানান দেব।’
উৎসবে এখানে নোঙর
গত বছর মুক্তি পেয়েছিল মেহেদী রনির ‘এখানে নোঙর’। ছবিটিতে আদর আজাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন স্পর্শিয়া। আসন্ন ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ছবিটি। এ নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা যেকোনো শিল্পীর জন্যই গর্বের বিষয়। আমি বরাবরই এই ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো একটু ক্রিটিক্যাল এক্লেমেশন পাবে।’
যৌথ জীবনের হালচাল
এ বছরের ভালোবাসা দিবসে জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা রাখেন স্পর্শিয়া। বিয়ে করেন সৈয়দ রিফাত নাওঈদ হোসেনকে। কেমন যাচ্ছে এ যৌথ জীবন? ‘এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ ভালো যাচ্ছে। সব সময় যেন এমনই ভালো যায়। কারো সঙ্গে নিজেদের সুখ-দুঃখ শেয়ার করব, এ কারণেই তো আমরা পার্টনারশিপে যাই। আমরা চাই এমন একজন থাকুক, যে আমাদের যত্ন নেবে, বন্ধু হয়ে পাশে থাকবে। সো আই এম কোয়াইট হ্যাপি। জীবন ভালোই যাচ্ছে। কারো নজর না লাগুক।’
স্পর্শিয়ার উল্টো রথ
সাধারণত বিয়ের পর শিল্পীদের কাজ কমে আসে। কারণ পারিবারিক ব্যস্ততা বাড়ে। শোবিজে সেভাবে সময় দিতে পারেন না। তবে স্পর্শিয়া এ ক্ষেত্রে উল্টো পথের যাত্রী। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে এখন কাজের জন্য সময় ও কাজের প্রতি ফোকাস অনেক বেড়েছে। এত দিন জীবনটা ছিল আমার আর আম্মুর। পরিবারের সব দায়িত্ব আমার একার ছিল। আই ওয়াজ দ্য ম্যান অব মাই হাউস। এখন সেই দায়িত্ব ভাগ হয়ে গেছে। ফলে কাজের প্রতি আমি আরো বেশি মনোযোগী হয়েছি। কাজে বেশি সময় দিতে পারছি। আম্মু তো অলওয়েজ আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট সিস্টেম। এখন আম্মুর সঙ্গে আরো একজন যুক্ত হয়েছেন, আমাকে ইন্সপায়ার করার জন্য, আমার জীবনসঙ্গী। গত এক-দুই বছরে কম কাজ করেছি। এখন চাইলেও কম কাজ করতে পারি না। আমার আম্মু ও জামাই দুজনই সারাক্ষণ উৎসাহ দিতে থাকেন। আমার মনে হয় পার্টনার এমনই হওয়া উচিত। সম্পর্ক খুব সুন্দর বিষয়, যেটা আপনাকে সামনে আগানোর জন্য উৎসাহ দেবে, পেছনে টানবে না। যদিও আমি খুব অলস মানুষ। ইন্টারেস্ট না পেলে কাজ করতে চাই না। আমি তো ঘরে বসে থাকতে পারলে সবচেয়ে সুখী মানুষ। ঘরে থাকব, মুভি দেখব, বই পড়ব—এটুকুই আমার চাহিদা। অনেক খ্যাতি-টাকা লাগবে—এসবের মোহ নেই আমার।’