মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে দুপুরে এবং সন্ধ্যার দিকে দুই দফায় হামলা করে নাশকতাকারীরা ভেঙ্গে ফেলা কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্রসহ কার্যালয়ের দরজা, জানালা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের স্ট্যাচু। এই হামলার ঘটনা ঘটেছে গত ১৮ জুলাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা গত ১৮ জুলাই শহরে ইউ আই স্কুল থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বেরিয়ে শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকা পার হয়ে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনের দিকের সড়কে আসলে বাধার সম্মুখীন হন। আন্দোলনকারীদের দাবি তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার সময়ে পালাতে গিয়ে পাশের লেকের পানিতে পড়ে দীপ্ত দে নামে এক কলেজ ছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দুই ঘণ্টা চেষ্টা পরে দীপ্তর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনাটি পুরো জেলায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত হয়ে পড়ে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এরপরই বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুপুর দেড়টার দিকে মাদারীপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। এসময়ে ভেঙ্গে ফেলা হয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র। এরপর সন্ধ্যার দিকে শহরের পুরান বাজার এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলা হয়। এরপর নাশকতাকারীরা দ্বিতীয় দফায় হামলা চালিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দরজা, জানালা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের স্ট্যাচু।
এই হামলা ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এমামলায় আসামী করা হয়েছে অর্ধশতাধিক হামলাকারীকে।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের অফিস সহকারী মিন্টু দরজি বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে আমি অফিসে ছিলাম। দেখি কয়েকশ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধেয়ে আসছে। পরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আমি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাই। এমন ঘটনা আমার জীবনে দেখিনি।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বাবু শরীফ বলেন, ১৯৪৯ সালে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের এই কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর দীর্ঘদিনেও এমন হামলা ঘটনা ঘটেনি। কেউ সাহস করেনি হামলা করতে। কেনো আমাদের অফিসে এমন হামলা হলো? আমাদের অফিসের বিরুদ্ধে কোনো চাঁদাবাজির রেকর্ড নেই। তবুও কেনো হামলা হলো? আমরা এর কঠোর বিচার চাই।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, জামায়াত- বিএনপি পরিকল্পিতভাবে মাদারীপুরের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরে হামলা করেছে। আওয়ামী লীগ অফিসে দুই দফায় হামলা চালিয়েছে। আমরা তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, এমন সহিংস ঘটনা আমি আমার জীবনে দেখিনি। যারা এই হামলায় জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
মাদারীপুর সদর থানায় ওসি এএইচএম সালাহউদ্দিন বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে আসামিদের।