সম্প্রতি ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বাড়ার খবরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। বিশেষ করে চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে এই সাপের আনাগোনা। সাপের ভয়ে ক্ষেতে কাজ করতে যাচ্ছেন না কৃষকরা। সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ফরিদপুর কোতোয়ালি এলাকায় রাসেলস ভাইপার মারতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ। ওই দিন বিকেলে শহরের রাসেল স্কয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি।
সভায় তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সাপ মারার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। যতজন যে কয়টি সাপ মারতে পারবে প্রত্যেককে সাপপ্রতি ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
ঘোষণার পর ফরিদপুর সদর উপজেলায় দুটি রাসেলস ভাইপার সাপ মেরেছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান ওই গ্রামের তোতা মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (৪৫)। এ সময় তিনি লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সাপটি মেরে ফেলেন। এর আগের দিন (বৃহস্পতিবার) ওই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে ইউসুফ আরো একটি রাসেলস ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের মোবাইলে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাসেলস ভাইপার সাপ মেরে ফেলার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে সমালোচনার শিকার হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, ‘যেকোনো বন্য প্রাণী নিধন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পুরস্কারের ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ ধরতে অথবা মারতে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যান, তাহলে এ দায় কে নেবে? বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে, মারা যাওয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য নয়।’
সমালোচনার মুখে শুক্রবার (২১ জুন) একটি সংশোধনী দিয়েছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ। সংশোধনীতে বলা হয়, ‘ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ ঘোষণা দেন যে ফরিদপুর সদর উপজেলাধীন কেউ যদি নিজেকে রক্ষাকারী পোশাক সংবলিত হয়ে এবং সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বনপূর্বক জনস্বার্থে রাসেলস ভাইপার সাপটি জীবিতাবস্থায় ধরতে পারেন, তবে তাকে ৫০ হাজার টাকায় পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝির কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্যটি বিকৃত আকারে ‘সাপ মারতে পারলে’ হিসেবে প্রকাশিত হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।