আব্দুস সাত্তার, বিশেষ প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা ইউনিয়নের পুরাতন রামপুর গ্রামে ফারিয়া (২০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রবাসী স্বামীর অভিভাবকদের দাবি ফারিয়া আত্মহত্যা করেছেন এবং গৃহবধূর মা-ভাইদের দাবি তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে।
গৃহবধূ ফারিয়া ওই গ্রামের আব্দুর রশিদের প্রবাসী ছেলে ফরহাদের স্ত্রী এবং বাগেরহাট জেলার চিতলমারি উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল শেকের মেয়ে। বৃৃহস্পতিবার নিহতের ভাই রুমি রায়হান বাদি হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শ্বশুর আব্দুর রশিদ ও শ্বাশুরি মোছা. ফাতেমা বেগমকে আটক করে থানায় এনে জ্ঞিাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, রামপুর পুরাতন বাজারের পাশে বিলপাড়া গ্রামের প্রবাসী ফরহাদের স্ত্রী ফারিয়া বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। রাতেই ওই গৃহবধূর শ্বশুড় ও শ্বাশুরি তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্বশুর আব্দুর রশিদ জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর দীর্ঘক্ষণ ফারিয়ার রুমের দরজা বন্ধ থাকায় তিনি ধাক্কা দিতে থাকেন। কিন্তু ভেতর থেকে কোন আওয়াজ না আসায় বাইরে থেকে দরজা খোলা হয়। এ সময় তারা ফারিয়াকে ধর্ণার (আড়ার) সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে, চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ফারিয়ার ভাই ও আত্মীয়রা বাগেরহাট থেকে রামপুর চলে আসেন।
ফারিয়ার চাচি শখিনা বেগম জানান, ফারিয়া ও ফরহাদ দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর প্রায় দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক সম্পর্ক নিয়ে নানা সমস্যা হচ্ছিল। শ্বাশুড়ি তাকে বিভিন্ন সময় গালমন্দ করতেন। তারা ফারিয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দিয়েছে।
ফারিয়ার চাচাত ভাই মো: ইমরুল শেখ জানান, ফারিয়াকে তার শ্বাশুড়ি ব্যাপক অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন। ওনারা তাদের ছেলের বউ হিসেবে ফারিয়াকে মানতে পারেননি। ফারিয়া বুধবার দুপুরে তার খালামনির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় আত্মহত্যার বিষয়টি বোঝা যায়নি। তবে শ্বশুড়-শাশুড়ি তাকে মেরে ফেলবে বলে ফারিয়া তার খালাকে জানিয়েছিল। সন্ধ্যার পর তার শ্বশুর ফোন করে জানায় ফারিয়া আত্মহত্যা করেছে।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, গৃহবধূকে কেউ আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিহতের ভাই রুমি রায়হান বাদি হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শ্বশুর আব্দুর রশিদ ও শ্বাশুরি মোছা: ফাতেমা বেগমকে আটক করে থানায় এনে জ্ঞিাসাবাদ করা হচ্ছে।