হাদী চকদার, টাঙ্গাইল উত্তর প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চর অপরিকল্পিত ভাবে কেটে বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে সরকারের সদ্য নির্মিত নদী রক্ষা গাইড বাঁধসহ আঞ্চলিক মহাসড়ক। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন অর্জুনা ইউনিয়নের জগৎপুরা এলাকায় বেশ কয়েকটি বালুর ঘাট তৈরি করে ট্রাক দিয়ে বালু বিক্রি করছেন।
স্থানীয়রা অবৈধ এসব বালুর ঘাট বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের কাছে বারবার লিখিত অভিযোগ দিলেও অজ্ঞাত কারণে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে জানান তারা।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের দাবী অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের কুঠিবয়ড়া থেকে নলীন বাজার পর্যন্ত যমুনা নদীর তীব্র ভাঙ্গন ঠেকাতে সম্প্রতি কয়েকশত’ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী রক্ষা গাইড বাঁধ নির্মাণ করেছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর সেই গাইড বাঁধের কাছ থেকেই অপরিকল্পিতভাবে ভেকু ও ট্রাক দিয়ে বালু কেটে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আসন্ন ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম তোতার নেতৃত্বে দলের কতিপয় নেতাকর্মীরা চালাচ্ছেন এসব অবৈধ বালুর ঘাট। জেগে ওঠা এসব চর স্থানীয়রা কয়েকজন মালিকানা দাবি করে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ দিয়েও পায়নি কোন প্রতিকার। উল্টো হয়েছেন মারধর ও হুমকির শিকার।
স্থানীয় আব্দুর রহিম বলেন, এভাবে বালু কাটলে সামনে বর্ষার সময় আমার জমি ভেঙে যাবে। চাষাবাদ না করলে তখন কি খাব? পরিবারের সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে।
জগৎপুরা ভোলা মিয়া বলেন, দিনের বেলায় না করে রাতের বেলা আমার জমির সব মাটি কেটে নিয়েছে তারা। বাধা দিতে গেলে মারধর সহ মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
স্থানীয় নিয়ামত খা বলেন, প্রশাসন আসে টাকা নেয় চলে যায়। মাটি কাটা বন্ধ হয় না। আমরা বাঁধা দিলে মারতে আসে। তাই ভয়ে কিছু বলিনা। তবে মাটি কাটা বন্ধ হওয়া দরকার।
অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে অভিযুক্ত ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম তোতা বলেন, বালু উত্তোলন কিছু দিন বন্ধ ছিল। পরে সব কিছু ম্যানেজ করেই ঘাট চালানো হচ্ছে। প্রশাসন ও সাংবাদিক সকলের জন্যই অর্থ বরাদ্দ আছে! সমস্যা নেই।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জাহিদুর রহমান বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভবিষ্যতেও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাত হোসেন বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে একবার নয় বারবার অভিযান চালাতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.