কিশোরগঞ্জ

হোসেনপুরে খিজির (আঃ) এর নামে অনুষ্ঠান পালিত

গতকাল ছিল ২৫শে ভাদ্র  ১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে মহরম১৪৪৩ হিজরি রোজ বৃহস্পতিবার,  ঋতুগত ভাবে  শরৎকাল। শরৎ কালের আবেগময়ী প্রকৃতি, আদিগন্ত সবুজের সমারোহ। এ সময় ফোটে গগন শিরীষ, ছাতিম, বকফুল, মিনজিরি,  শেফালি, শিউলি, কলিয়েন্ড্রা, কাশফুল ইত্যাদি। দূর্বা ঘাস ভিজে যায় হালকা শিশিরে। জনমনে প্রশান্তির এক তৃপ্তিময় আমেজের সৃষ্টি হয়।কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে অদম্য বিলাশিতায় আবেনময়ী রুপ প্রকৃতির অভয়ারণ্যে। বিলের জলে নক্ষত্রের মতো ফুটে থাকে সাদা ও লাল শাপলা। এ সময় ফল হিসাবে পাওয়া যায় আমলকী, জলপাই, জগডুমুর, তাল, অরবরই,  করমচা, চালতা,  ডেউয়া ইত্যাদি।  সবমিলিয়ে মানুষের জীবন মানে আসে প্রসারতম পরিবর্তন। আনন্দে উল্লোরিত হয় সংস্কৃতি বা ভক্তিগত মানুষজনের সুমিষ্ট মন।দেশব্যাপি মনোলোভা সব অনুষ্ঠান বা কৃষ্টি কালচারের চাড়নতা শুরু হয়।

তেমনই কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলায় দেখা পাওয়া যায়, ধর্মীয় মনোভাবাপন্ন অনুষ্ঠান (মরমী ব্যাক্তিবর্গের মতে) পালিত হয়,হযরত খিজির (আঃ) এর নামে অনবদ্য ভালবাসার সৃষ্টি হিসেবে নদে ভাসানো হয় বেড়া,ছোট কলা গাছের ভেলা সাজিয়ে (মুরগের গোস্ত,রুটি,দুধ,ফলমূল) ইত্যাদি সমন্বয়। নৈবেদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয় মোমবাতি আগরবাতি এবং সুগন্ধির সমাহার।পরে আয়োজন করা হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের এবং আধ্যাতিক গানের সুর ও বাজনার ধ্বনিতে মোখরিত হয় বাউল মন।

জানা যায় -বহুকাল থেকে ভাদ্র মাসের শেষ বৃহস্পতিবার আবার সূফীদের মতে যাকে বলা হয় জের বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হয় মরমী অনুষ্ঠান। 
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় শুরু হয়ে সারা রাত ব্যাপি চলে অনুষ্ঠান কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর, তোতা শাহ ফকিরের বাড়ীতে। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতির দ্বায়িত্বে ছিলেন ফকির নুরুল ইসলাম শাহ( চিসতি) তিনি একই গ্রামের হাজীবাড়ী নামক মহল্লার কৃতি সন্তান।
তিনি ঢাকা জেলার নবাব গঞ্জ থানার আগলা গ্রামের হযরত শাহ সূফি সামসউদ্দীন চিসতি( রঃ) এর কাছ থেকে শিষ্যত্ব গ্রহন করেন ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে।
হযরত শাহ সামসউদ্দীন চিসতি( রঃ) শিশ্যষত্ব গ্রহন করেন,তারই পিতা হয়রত শাহ সুফি এয়াকুব চান ফকির(রঃ) এর কাছে,তাহার পির ছিলেন তাহার পিতা  হযরত শাহ সূফি আবু চান চসতী (রঃ)তিনার পির ছিলেন তিনার চাচা হযরত শাহ সূফি রতন ফকির চিসতি( রঃ)।

জানা যায়- উক্ত গানের পর্বে কন্ঠ শিল্পি হিসেবে গান পরিবেশন করেন, ছন্দু সরকার (নুরুল ইসলাম শাহের শিষ্য), শাহ শফিকুল ইসলাম (গাজী শাহের শিষ্য), তোতা শাহ (হযরত সামসউদ্দীন চিসতি ( রঃ) এর শিষ্য), নাসির রাজা (মাহফুজ রাজার গানের ছাত্র)।

উক্ত অনুষ্ঠান উপভোগ করেন,এলাকা ও প্রতিবেশী এলাকার শীর্ষ স্থানীয় ময়মুরুব্বি, কিশোর, যোবক, এবং সংস্কৃতিমনা সকল শ্রেনী পেশার মানুষ মহিলাসহ।অসংখ্য মানুষের মিলনায়োতনে এক মধুময় লগ্নের সৃষ্টি হয়।অবশেষে সিন্নি খাওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।হাজার মানুষের প্রানে অনবদ্য অনুভূতির সৃষ্টি করে এসব ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker