রাজনীতি

সরকার সুষ্ঠ নির্বাচন দেবে এটা শয়তানেও বিশ্বাস করে না: সাইফুল হক

একতরফা নির্বাচনের ঘোষণায় সরকার ‘গণদুশমন’ এ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সরকারকে বলব এখনো সময় আছে। আপনারা কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নেবেন, নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন।

সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ অন্তবর্তীকালীন সরকার কিভাবে গঠিত হতে পারে… নীতিগতভাবে যদি সিদ্ধান্ত নেন। আমরা বিশ্বাস করি সংলাপের মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হতে পারে।

সাইফুল হক বলেন, এই সরকার যারা ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন দেবে… এটা কোনো বেকুবে বিশ্বাস করে? এই সরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে শয়তানেও বিশ্বাস করে না? গতকাল শুনলাম একজন নেত্রী রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেছেন।

এরকম কথা শোনা যাচ্ছে যে, আলাপ-আলোচনা করে কয়েকদিন তফসিলটা পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। এর মধ্য দিয়ে তারা জনগণকে দেখাতে চায়, আজকে তারা আলোচনার ফাঁদে বিরোধী দলকে ফেলতে চায়।

রাজনৈতিক সংকটকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার জন্য আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, নির্বাচনী তফসিল পেছানো না, যে তফসিল দিয়েছেন ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন অনতিবিলম্বে সেই তারিখ স্থগিত ঘোষণা করতে হবে। বিরোধী দলের নেতারা যারা জেলখানায় আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

হয়রানিমূলক সাজানো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আলাপ-আলোচনা-সংলাপের একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার ভাবছে পুলিশ দিয়ে, বিজেবি দিয়ে, র‌্যাব দিয়ে, দমনপীড়ন করে তারা (সরকার) একতরফা নির্বাচন পার করে ফেলবে। তারা আরেকটি নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় বসবে, তারপর বিদেশিদের পায়ে-টায়ে ধরে সব ব্যবস্থা করে ফেলবে।

তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে আরো জোরদার কর্মসূচি আসছে। আপনারা (সরকার) যদি ভেবে থাকেন পুলিশ-বিজিবি দিয়ে সর্বাত্মক দমন করে আর কিছু গাড়ি-ঘোড়া চলার ভয়ে বিরোধীদলের আন্দোলন শেষ হয়ে গেল… মোটেই সেটা ভাববেন না।

আন্দোলন আরো জোরদার হচ্ছে। সরকারের বরং পায়ের তলায় মাটি নাই, ওদের ভেতরে কম্পমান দশা। এই কম্পমান দশা আরেকটু জোরে ধাক্কা লাগবে। আমরা জনগণের ওপর ভর করে জোরে ধাক্কা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়ে আসব।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ সেলিমের সভাপতিত্বে ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের সঞ্চালনায় এই সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেএসডির সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের মুফাখখারুল ইসলাম নবাব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইমরান ইমন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

‘একতরফা’ তফসিলের প্রতিবাদে সকালে বিজয় নগর ও নয়া পল্টনের সড়কে নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ, নওয়াব আলী আব্বাস খানের নেতৃত্বে ১২ দলীয় জোট, হারুন চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং নেয়ামূল বশিরের নেতৃত্বে এলডিপি নেতাকর্মীরা মিছিল করেছে। এ ছাড়া বিএনপি মহানগর, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্র দল, মহিলা দলের নেতাকর্মীরা মগবাজার রেলগেইট, রামপুরা, রমনা, মতিঝিল, পুরানা পল্টনে ‘ঝটিকা’ মিছিল করেছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker