পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মুজরি বাড়িয়েছেন কারখানা মালিকরা। ফলে তাঁদের পোশাক তৈরির খরচ বাড়বে এবং কমবে মুনাফা। এ অবস্থায় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে—পোশাক মালিকরা যখন এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তখন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বৈশ্বিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপসহ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো বলেছে রপ্তানিকারকরা যাতে বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নিতে পারেন এ জন্য তারা ক্রয়মূল্য বাড়াবে।
এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
চীনের পর বাংলাদেশই বিশ্বের সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলতি সপ্তাহে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে গত ৭ নভেম্বর ন্যূনতম মাসিক মজুরি প্রায় ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা (১১৩ ডলার) করার ঘোষণা দেয় মুজরি বোর্ড। আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম।
লামার আরো বলেন, ‘মজুরি বাড়ানোর জন্য দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতি নিশ্চিত করতে আমরা যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তা আমরা ও আমাদের সদস্যরা আগেও একাধিকবার বলেছি। সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য প্রতিবছর ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনার আহ্বান আমরা বরাবরই জানিয়ে আসছি।’
মূলত সস্তা শ্রমের কারণেই বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্প এখন বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। দেশের ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করা এই খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত। বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ১৬ শতাংশ আসে তৈরি পোশাকশিল্প থেকে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলেছে, এই ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর পরও বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি এশিয়ার অন্যান্য তৈরি পোশাক উৎপাদক দেশগুলোর চেয়ে যথেষ্ট কম। বাড়ানোর পর বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি দাঁড়াবে মাসিক ১১৩ ডলার, যেখানে ভিয়েতনামের শ্রমিকদের মাসিক মজুরি ২৭৫ ডলার এবং কম্বোডিয়ার শ্রমিকদের মাসিক মজুরি ২৫০ ডলার।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। গত মাসে অ্যাবেরক্রমবি অ্যান্ড ফিচ ও লুলুমনসহ এএএফএর বেশ কিছু সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছে, তারা চায় শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হোক। এতে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি হিসাবে নেওয়া হোক, যা বর্তমানে ৯ শতাংশ। গত জুলাই মাসেও এ বিষয়ে লামার প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন।