সস্তায় পণ্য কেনার সুযোগের নামে শত শত কোটি টাকার ভাউচার বিক্রি করেছে ই-অরেঞ্জ নামের প্রতিষ্ঠান। মাশরাফির মতো জাতীয় তারকাকে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ব্যবসার গতি বাড়লেও সময়মতো পণ্য পায়নি ক্রেতারা। মাসের পর মাস ঘুরে বিনিয়োগ করা অর্থের অনিশ্চয়তার মুখে গত মাসে রাস্তায় নামেন হাজারো ক্রেতা।
কিন্তু ততদিনে ই-অরেঞ্জের কার্যালয়ে তালা। সে সময় হদিস মিলছিল না তাদের মালিক বা কর্মকর্তাদের কারো। মামলা দিতে গেলেও গড়িমসি করছিল থানার কর্মকর্তারা- এমন অভিযোগও ছিল।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা ই-অরেঞ্জের সাথে সম্পৃক্ত এবং ব্যবসার বেনামি অংশীদার বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ক্রেতারা।
বিক্ষোভের কয়েকদিনের মাথায় ই-অরেঞ্জের মালিক ও পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন সোহেল রানা।
তবে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মিললো চাঞ্চল্যকর তথ্য। ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
শুক্রবার বিএসএফের সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করে। শনিবার সেখানকার স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল উত্তরবঙ্গ সংবাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঐ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে শুক্রবার কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে সোহেল রানা নামে এক বাংলাদেশিকে আটক করে বিএসএফ। তার কাছ থেকে বিদেশি পাসপোর্ট, একাধিক মোবাইল ও এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে সোহেল রানার আটকের বিষয়ে এখনো বিএসএফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে কিছু জানানো হয়নি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবিও নিশ্চিত করতে পারেনি তথ্যটি।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সময় সংবাদকে বলেন, আমরাও গণমাধ্যমে তথ্যটি জেনেছি, এখনো নিশ্চিত না। তবে সোহেল রানা গত বৃহস্পতিবার সবশেষ বনানী থানায় অফিস করেন। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন তিনি অফিসে আসেননি। তবে আজও তিনি অফিস করেননি।
তিনি বলেন, ‘আমরা তার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। রিং হলেও কলটি তিনি ধরেননি। তার বাসায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন কিছু বলতে পারেননি।’
১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে। গ্রাহকদের এখন বড় প্রশ্ন, বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলায় নিযুক্ত বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে কিভাবে সোহেল রানা ভারতে চলে গেলেন।