পুনম শাহরীয়ার ঋতু, জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
"ছেলে আমার বড় হবে, মাকে বলত সে কথা, হবে মানুষের মত মানুষ এক লেখা ইতিহাসের পাতায়। নিজ হাতে খেতে পারতাম না! বাবা বলত ও খোকা, যখন আমি খাকবো না, কি করবিরে বোকা? এতো রক্তের সাথে রক্তের টান স্বার্থের অনেক উর্ধ্বে, হঠাৎ অজানা ঝড়ে তোমায় হারালাম, মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, বাবা কতদিন কতদিন দেখি না তেমায়।”
কণ্ঠ শিল্পী জেমস এর গান প্রতিটি সন্তানের হৃদয় কেড়ে নিলেও ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটলো গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ গ্রামে। রোববার সকালে বাবা দিবসে এক নেশাগ্রস্থ ছেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধ বাবা উসমান বেপারীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করলো। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এখন সেই বৃদ্ধ পিতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আহত ঐ বৃদ্ধ হলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর থানার সার্দাগঞ্জ এলাকার মৃত নেফাজ উদ্দিন বেপারীর ছেলে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানান, কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ গ্রামের বৃদ্ধ ওসমান বেপারি ছোট ছেলে শরীফুল ইসলাম নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে ওসমান বেপারির তিন ছেলে মধ্যে সফিকুল ইসলাম, বড় ছেলে মাহবুব হোসেনের সাথে নেশা করার বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে মেঝো ছেলে সফিকুল ইসলাম তার নেশাগ্রস্থ ছোট ভাই শরীফুল ইসলামকে মারধর করতে থাকে। এ সময় বড় ভাই মাহবুব হোসেন ও বাবাবৃদ্ধ ওসমান বেপারি থামানোর জন্য এগিয়ে আসলে মেঝো ছেলে তাদের উপর হামলা করে। এক পর্যায়ে ওসমান বেপারি লাঠির আঘাতে মাথ ফেটে ও চোখে জখম হয়।
বৃদ্ধ ওসমান বেপারির রক্তাক্ত ও জখম হওয়ার খবর পেয়ে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে আহত ওসমান বেপারিকে উদ্ধার করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে এ ঘটনায় হামলাকারী নিজেই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত সফিকুল ইসলাম বলেন, নেশাগ্রস্থ ছোট ভাই শরীফুল ইসলামকে শাসন করার সময় বাবা ও বড় ভাই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলে এ সময় বাবার শরীরে আঘাত লাগে। আমি বাবাকে কখনো মারতে চাইনি।
বৃদ্ধ ওসমান বেপারি বলেন, ছেলেরা মারামরি করার সময় আমি তাদের থামাতে যাই। এ সময় ছেলের একাধিক লাঠির আঘাতে মাথা ও চোখে জখম হয়েছে।
কাশিমপুর থানার ওসি রাফিউল করিম বলেন, এঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। আঘাতপ্রাপ্ত বাবা বৃদ্ধ ওসমান বেপারির কাছে বিস্তারিত জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।