গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বামনদাহ গ্রামের বংশাই নদীর উপর সেতু না থাকায় ভোগান্তির শিকার ৭ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। কোনো মতে বাঁশের সেতুর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন গ্রাম বাসীরা।
দীর্ঘদিন ধরে একটি ব্রিজের দাবি জানিয়ে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দফতরের অফিসে ধর্না দিয়েও কোনো সুফল পাননি ভুক্তভোগীরা।
উপজেলার বামনদাহ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর উপর সেতু না থাকায় ৭ টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে থাকেন। সেতুটির পশ্চিম পাশের অত্যন্ত ৭টি গ্রামের মানুষকে নিত্যদিন কৃষি পণ্য বিপণন, চিকিৎসা ও শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যেতে হয় পূর্ব দিকের কালিয়াকৈর বাজার, বলিয়াদি ও বামনদাহ গ্রামে। পূর্ব দিকেরও ৩টি গ্রামের মানুষকে নানা কাজে যাতায়াত করতে হয় নদীর অপর দিকের গ্রামগুলোতে।
প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয়রাই বাঁশ ও খুঁটি দিয়ে সেতু তৈরি করে কোনো রকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। তবে বর্ষাকালের চিত্র থাকে ভিন্ন। ৭ গ্রামের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আজও সু-নজর পড়েনি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের। ফলে দুটি উপজেলার (শ্রীফলতলী ও সুত্রাপুর ইউনিয়ন) মানুষের সেতু বন্ধন অধরাই রয়ে গেছে। অপরদিকে সাজনদারা, বাজা বলিয়াদি, নয়াপাড়া, চানপুর, আড়াইগঞ্জ ও বাহমান টালাবহসহ প্রায় ৭ গ্রামে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজ, ভৃঙ্গরাজ তালেবাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়, বকসিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মনসুর আলী ও আছিয়া বেগম জানান, এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় এলাকার মানুষের প্রচেষ্টায় নিজেরাই বাঁশ সংগ্রহ করে চলাচলের জন্য অস্থায়ী সেতু তৈরি করেছি। এছাড়া যখন পানি বেশী থাকে তখন নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। শুকনো মৌসুমে পায়ে হেটে কাঁদা ভেঙ্গে পারাপারের সময় অনেকেই আহত হয়। গতকালকে এক বৃদ্ধা মহিলা নদী পার হতে গিয়ে পানিতে পরে আহত হয়। কয়েকদিন আগেও এক স্কুল শিক্ষার্থী পার হতে গিয়ে পানিতে পরে গেলে স্থানীয়া উদ্ধার করে। কোন গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিতে হলে পাজাকুলে করে নদী পার করে তারপর হাসপাতালে নিতে হয়।
স্থানীয় কৃষক সানোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন ও কলেজ ছাত্র শাহদাত মিয়া জানান, বর্ষার সময় পানি বাড়লে অনেক দূরের রাস্তা বলিয়াদি বাজার সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে চলাচল করতে সময় ব্যয় হয় দিগুণ। এছাড়া নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়ে কৃষক, ব্যবসায়ী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সুত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোলাইমান কবির মিন্টু বলেন, বামন্দহ এলাকাটি দুই ইউনিয়নে পড়ার কারণে সেতু করা সম্ভব হচ্ছেনা তারপরেও জায়গাটি রেলওয়ে জায়গা হওয়াতে সরকারের পক্ষে প্রস্তাব গ্রহণ করছেন না। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এলজিইডি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চেষ্টা করা হবে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের।
এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি সেতু নির্মাণের। সেতুটি নির্মিত হলে শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়ন ও লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ কমবে বলে জানান স্থানীয়রা।