ঝালকাঠি

ঝালকাঠিতে নোটারী করে এক মাস পরে দন্ড পেয়েছে বাল্যবিয়ের অপরাধের

ঝালকাঠির রাজাপুরে অপ্রাপ্ত মেয়ের বিজ্ঞ আদালতে নোটারী করে এক মাস পরে এক প্রবাসীর স্ত্রী বিশ হাজার টাকা অর্থ দন্ড পেয়েছে বাল্যবিয়ের অপরাধের। ভূক্তভোগী ঐ প্রবাসীর স্ত্রীর নাম মারুফা বেগম। সে উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী এলাকার সৌদি প্রবাসী মো: আনোয়ার হাওলাদারের স্ত্রী। 

গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান খান ভূক্তভোগীকে তার কার্যালয়ে এনে এ দন্ড প্রদান করেন। 

সরেজমিনে মো: মোজ্জামেল হাওলাদার, রানু বেগম, জব্বার হাওলাদার জানায়, মারুফার স্বামী আনোয়ার সৌদিতে থাকেন এ সুযোগে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ফয়সালের বাবা নাসির উদ্দিন তাকে বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাসির উদ্দিন মারুফা ঘরে একা আছে মনে করে মারুফার বাড়ির প্রাচীর বেড়া ভেঙ্গে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরে থাকা লোকজন নাসির উদ্দিনকে বেধে থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্যকে মোবাইল ফোনে জানায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম সকালে বিচার করা হবে এই আশ্বাস দিয়ে নাসিরকে ছাড়িয়ে দেয়। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বাবার রাতের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে কৌশলে গত ২৮ ডিসেম্বর মারুফার মেয়ের আদালতে নোটারীর ঘটনাকে বাল্য বিয়ে অপরাধ দেখিয়ে সকালে ইউএনওকে জানায়। ভূক্তভোগী মারুফার বাড়িতে বাল্যবিয়ের কোন আয়োজন বা অনুষ্ঠানের কোন তথ্য প্রমান না থাকলেও ইউএনও গ্রাম পুলিশ ফয়সালের কথার উপর ভিত্তি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মারুফাকে বিশ হাজার টাকা জমিরানা অনাদায় সাত দিনের কারাদন্ড প্রদান করেন। মারুফা জরিমানার বিশ হাজার টাকা পরিশোধ করে ছাড়া পায়। 

ভূক্তভোগী মারুফা বেগম জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গ্রাম পুলিশের বাবা নাসির দরজা ভেঙ্গে আমার ঘরে ডুকে পড়ে। ঐ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ফয়সাল ইউএনও স্যারকে ভুলবুঝিয়ে এক মাস আগে আমার মেয়ে ছনিয়ার আদালতের মাধ্যমে বিয়ের অনুমতিপত্র নেয়ার ঘটনা বাল্যবিয়ে দেখিয়ে আমাকে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। আমার মেয়েকেও ফয়সাল বিভিন্ন সময় জালাতন করতো তাই আমি বিয়ের প্রস্তুতি নেই। মেয়ের আদালতে নোটারী হওয়ার কাগজপত্র স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম নিয়ে নেয়ে। এখন চাইলে সে বলে ইউএনও স্যারের কাছে। ইউএনও স্যার বলে ইউপি সদস্যর কাছে।

মো: নাসির উদ্দিন হাওলাদার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, আমি রাতে আমার ছেলে ফয়সালকে ডাকতে মারুফার বাড়িতে গিয়েছিলাম।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মো. ফয়সাল হাওলাদার জানায়, এক মাস পূর্বে বিয়ের ঘটনা গত এক সপ্তাহ আগে আমি জানতে পারি। রাতে মারুফার ঘরে দুইটি অপরিচিত ছেলেকে দেখে মনে করেছিলাম জামাই এসেছে। সাথে সাথে আমি ইউএনও স্যারকে জানাই। পরে শুনি ঐ ছেলেদের মধ্যে কেউ জামাই ছিলনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: আমিনুল ইসলাম জানান, ইউএনও স্যার কোন আইনে জরিমানা করেছে তা আমার জানানাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান খান বলেন, রাতে ছেলে মেয়ে এক সঙ্গে ছিল। এছাড়াও মেয়ের মা অপরাধ স্বীকার করেছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker