ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় সুপারি চুরির অভিযোগে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে ১১ বছরের শিশু ও তার বাবা মো. বাবুল হাওলাদারকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাপ-ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতে তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের লতিফ খানের বাড়ির আঙিনায় শুকিয়ে মজুত করে রাখা দুই কুড়ি সুপারি চুরির ঘটনা ঘটে। শিশু ছাব্বিরের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে এনে শিশু ও তার বাবা মো. বাবুল হাওলাদারকে লতিফ খান বাড়িতে ধরে নিয়ে যান। এরপর বাড়ির উঠানে আমড়া গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে বাপ-ছেলেকে মারধর এবং সারা রাত নির্যাতন করা হয়। সকালে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেকল বাঁধা শিশুর ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হলে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে বাবুল হাওলাদার ও তার ছেলেকে ছেড়ে দেন লতিফ খান।
বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘সাব্বির অল্প কিছু সুপারি চুরি করতে পারে। আমাকে জানালে আমি ছেলের বিচার করতাম। ছেলের অপরাধে আমাকেও সারা রাত রেঁধে রাখে। আর ছেলেকে মারধর করায় সে এখন অসুস্থ। ওষুধ খাইয়ে বাসায় রেখেছি। সারা রাত আমাদের খোলা আকাশের নিচে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখায় শীতে অনেক কষ্ট পেয়েছি। সকালে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নিয়ে স্থানীয় সালিশদাররা আমাদের ছেড়ে দেয়।’
সালিশে অংশ নেয়া স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল খালেক হাওলাদার বলেন, ‘ছেলেটির এমন চুরির অভিযোগ আগেও ছিল। তবে আমরা এলাকার গণ্যমান্য লোকজন মিলে বিষয়টি সমঝোতা করে বাপ-ছেলেকে ছাড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করি।’
লতিফ খান বলেন, ‘ছাব্বির সুপারি চুরি করায় তাকে বেঁধে রাখা হয়। মারধর করা হয়নি। চুরি করার পরও ছেলেকে শাসন না করায় তার বাবাকেও ধরে আনা হয়।’
এ ব্যাপারে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘এমন ঘটনার কোনো অভিযোগ এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.