বিএনপি নেতা আজম খাঁটি রাজনৈতিক বীর যোদ্ধা, একজন কর্মী। যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই মামলায় এজাহারে তার নামনেই । সবচেয়ে করুন দৃশ্য হচ্ছে আলী আজমের মা মারা গেল। এরপর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে জানাজায় আসলেন কিন্তু ডান্ডাবেড়ি পরিহিত অবস্থায় থাকার কারণে মায়ের কবরে নামতে পারলেন না। সে চোর কিংবা ডাকাতনন। তবুও কেন ডাণ্ডাবেড়ি পড়েই মায়ের জানাজা পড়ালেন। এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গায়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজমকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ঘটনায় আলী আজমের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা তার বাড়িতে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার গাছবাড়ি পাবরিয়ার তারা গ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গায়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারা আলী আজমের বাড়িতে আসেন। এসময় গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা আলী আজমের পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং তার স্ত্রী সন্তানের হাতে নগদ অর্থ অনুদান তুলে দেন।
এ সময় গায়েশ্বর চন্দ্র রায় সরকারের কড়াকড়ি আরোপ করে বলেন, আমরা অবৈধ পার্লামেন্টের বিলুপ্তি দাবী করছি। একটি সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন করার লক্ষ্যে সরকারের কাছে আহবান করেছি। আমরা আবেদন করছি আপনারা শীঘ্রই পদত্যাগ করুন এবং মানুষের ভোটারধিকার ফেরত দিন। এই সরকার একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। যা দেশ-বিদেশে নিন্দনীয় হচ্ছে। সরকার নিন্দনীয় হলেও আমরা লজ্জা পাচ্ছি এই দেশের জনগণ হিসেবে। এর জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয় বাংলাদেশের জনগণ দায়ী নয় এর জন্য ফ্যাসিবাদী সরকার দায়ী।
আলী আজমের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার লিপি বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল রয়েছি তবে আমার স্বামী নির্দোষ। তার নামে কোন মামলা মোকদ্দমা ছিল না। আমার স্বামী মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছে এ শোকে শাশুড়ী মারা গেছে। সবচেয়ে কষ্ট লেগেছে সে বাড়িতে আসার পরেও কথা বলতে পারিনি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে কিন্তু তাই বলে মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়ি খুলে দেওয়া হয়নি এটা আমাদের ও এলাকাবাসীকেও কষ্ট দিয়েছে। জানাজা শেষে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে সই সুযোগ টুকো দেওয়া হয়নি। আমরা সরকারের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই নির্দোষ মানুষটির মুক্তি চাই।
আলী আজমের ভগ্নিপতি সুরুত আলী বলেন, আমার সুমুন্দি নির্দোষ তাকে মিথ্যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে যখন গ্রেপ্তার করে তখন আমার শাশুড়ী দুইটা কথা বলতে চাইলে কথা বলতে না পারলে সে অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তিনি মারা যান। তার জানাজায় যখন আলম ভাই আসলেন তখন সবাই দেখেছি তার হাতে হাতকড়া, পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি লাগানো। তখন আমি তাদেরকে অনুরোধ করি ডাণ্ডাবেড়ি পড়িয়ে নামাজের সময়টুকু অন্তত তার ডাণ্ডা ও হাতকড়া খুলে দেন কিন্তু সেটাও করেননি প্রশাসন।
এ সময় সমবেদনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সায়েদুল আলম, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ সালাম আজাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমদ, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ইব্রাহিম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, কালিকাপুর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান, গাজীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু তাহের মুসল্লীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।