‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসর এবার মাঠে গড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই একের পর এক আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও সবাইকে ছাড়িয়ে চমক দেখাতে মরিয়া আয়োজক দেশটি। বিশ্বকাপের ৬৪ ম্যাচের মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ৬০টি ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে। ফলে ৩২ দলের বিশ্বকাপে ২৮ দলের বিদায় নিশ্চিত হয়ে শিরোপার দৌড়ে টিকে রয়েছে চারটি দল।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের কাছে ইংল্যান্ডের ২-১ ব্যবধানে হারের ম্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালসহ মোট ৬০টি খেলা। উদ্বোধনী দিন থেকে এই ম্যাচ পর্যন্ত খেলা হয়েছিল ‘আল রিহলা’ বলে। কিন্তু এবার শিরোপার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা দলগুলোর চার ম্যাচ (দুই সেমিফাইনাল, তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ও ফাইনাল) হবে নতুন বল দিয়ে।
কাতার বিশ্বকাপের নতুন এই বলের নাম ‘আল হিলম’। যার অর্থ ‘স্বপ্ন’। অর্থাৎ এই বলে লাথি মেরেই বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাবে দলগুলো। ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা -ফিফার নির্দেশনা মোতাবেক ‘আল রিহলা’র মতো নতুন এই বল প্রস্তুত করেছে বিখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এডিডাস।
এবারের বিশ্বকাপের বলে প্রথমবার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই বিশ্বকাপে আল রিহলার মতোই আল হিলম বলেও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর সেমি অটোমেটেড প্রযুক্তি মাঠে রেফারিকে দ্রুত ও নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে থাকে। আগে অফ-সাইড সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ত ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। কিন্তু এবার দেখা গেছে এই প্রযুক্তি রেফারিকে দ্রুতই নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে।
নতুন এই বল নিয়ে কথা বলেছেন ফিফার ফুটবল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের পরিচালক জোহানেস হোলজমুলার। তিনি বলেন, ‘কানেক্টেড বল টেকনোলোজির বিকাশের মাধ্যমে ভিডিও ম্যাচ অফিসিয়ালদের জন্য তথ্যের আরেকটি অতিরিক্ত গুরুত্বুপূর্ণ স্তর বানাতে সক্ষম হয়েছে এডিডাস। বল থেকে পাওয়া উপাত্ত এক নতুন অন্তর্দৃষ্টি খুলে দিল বিশ্বকাপে মাঠের চারপাশে অনন্য মুহূর্তগুলোর গল্প বলার জন্য।’
এডিডাস ফুটবলের জেনারেল ম্যানেজার টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা সব দলকে শুভকামনা জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্বকে একত্রিত করার জন্য খেলাধুলা ও ফুটবলকে আলোর বাতিঘর হিসেবে উপস্থান করবে আল হিলম। বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে লাখ লাখ লোক খেলাটির প্রতি আবেগের জন্য একত্রিত হবে। যারা শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে টিকে আছে তাদের শুভকামনা জানাচ্ছি। কারণ তারা ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।’
আল হিলম বলে পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে পারে এমন সব উপাদান খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করা হয়েছে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ইতিহাসে আল হিলম-ই প্রথম বল যা কি-না শুধুমাত্র তরল কালি ও আঠা দ্বারা তৈরি। বলে সেই আল রিহলার মতোই সুক্ষ্ম ত্রিভুজাকৃতির প্যাটার্ন রাখা হয়েছে। প্যাটার্নগুলো কাতারের পতাকার রংয়ে আবৃত। সঙ্গে বলে কিছুটা সোনালী আভা রয়েছে যা কি-না বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি ও দোহার চকচকে মরুভূমি থেকে অনুপ্রাণিত।