ফুটবল

টাইব্রেকারের নায়ক মার্তিনেজ, সেমিফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা

এই ম্যাচ যে এত রং বদলাবে কে জানত! কে জানত ৮২ মিনিট পর্যন্ত আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে গিয়ে থাকা ম্যাচে নেদারল্যান্ডস অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াবে! বাকি সময়ে ২ গোল শোধ করে ডাচটা ঠিকই অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত নিয়ে গেল ম্যাচটা। তারপর টাইব্রেকার।

সেখানেও কত নাটক! নেদারল্যান্ডসের দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। তৃতীয় শটে গোল পায় ডাচরা। আর্জেন্টিনা গোল পায় প্রথম তিন শটেই। কিন্তু এনজো ফার্নান্দেজ চতুর্থ শটটা বাইরে মারায় আবার জমে উঠে টাইব্রেকার। ডাচরা চতুর্থ ও পঞ্চম দুটি শটেই গোল করে। ফলে লাওতারো মার্তিনেজের নেওয়া পঞ্চম শটটা হয়ে উঠে ম্যাচের ভাগ্য-নির্ধারক। এবার আর ভুল করেন লাওতারো। তাঁর শট নেদারল্যান্ডের জালে যেতেই উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন মেসিরা। ৪-৩ ব্যবধানে জিতে আর্জেন্টিনা উঠে যায় সেমিফাইনালে। যেখানে মেসিদের প্রতিপক্ষ আগের ম্যাচে ব্রাজিলকে হারানো ক্রোয়েশিয়া।

অথচ ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের বেশিরভাগটা আর্জেন্টিনাই এগিয়ে ছিল। আর সেটা লিওনেল মেসির কল্যানে। প্রতি ম্যাচেই এমন মুহূর্তের অপেক্ষায় থাকে আর্জেন্টিনা। মেসি অসাধারণ কোনো পাস দিয়ে গোল করাবেন, কিন্তু নিজেই করবেন অবিশ্বাস্য কোনো গোল।

নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচে সেই মুহূর্তটা এলো ৩৫ মিনিটে। ডান দিক দিয়ে গড়ে ওঠা আক্রমণে বল নিয়ে এগিয়ে যান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তারপর একটু বাঁ দিকে গিয়ে অসাধারণ এক পাস বাড়ান সতীর্থ নাহুয়েল মলিনার দিকে। দারুণ ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠান মলিনা। শুধু গোল করিয়েই ক্ষান্ত দেননি মেসি, পরে ৭৩ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে নিজেও করেছেন একটা গোল। ক্লাব ও দেশের জার্সি মিলিয়ে ১০০১তম ম্যাচে যেটি তাঁর ৭৯০তম গোল। বিশ্বকাপে এ নিয়ে তাঁর গোল হলো ১০টি। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছুঁয়েছেন মেসি।

ম্যাচটা তখন আর্জেন্টিনার হাতের মধ্যে। কিন্তু সেই ম্যাচের আবহটাই বদলে যেতে শুরু করে ৮৩ মিনিটে ভাউট বেগহোর্স্টের গোলে। বাঁ দিক থেকে স্টিভেন বের্গহোইসের করা দারুণ এক ক্রসে লাফিয়ে উঠে হেড করেন বেসিকতাসের ফরোয়ার্ড বেগহোর্স্ট। বল আর্জেন্টিনার জালে! ২-১।

ওই গোলেই চাঙ্গা হয়ে উঠা নেদারল্যান্ডস জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করতে থাকে পরের গোলটার জন্য। অস্থির করে ফেলে আর্জেন্টাইন রক্ষণভাগকে। তবে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকা ম্যাচের ঘড়িতে সময়ই। ১০ মিনিট যোগ হওয়া সময়ের একেবারে শেষদিকে এসে বড় ভুলটা করে আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সের সীমানা ঘেষে নাথান আকেকে ফাউল করে ডাচদের ফ্রি-কিক দেন মেসি। অবিশ্বাস্য ব্যাপারটা ঘরে ২২ গজ দূরের ওই ফ্রি-কিক থেকে। টন কপমাইনার্স উড়িয়ে শট না মেরে গড়িয়ে পাস থেকে জটলার মধ্যে বেগহোর্স্টকে। তাঁর শট যায় আর্জেন্টিনার জালে, ২-২!

অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে নিরাপদ খেলার চেষ্টা করেছে দুই দলই। তবে এর মধ্যে ডাচরা দুটি শট নিয়েছে আর্জেন্টিনার গোলমুখে, দিবু মার্তিনেজের হাতেই গেছে সেই শট। আর্জেন্টিনাও সুযোগ পেয়েছিল একাধিক। তবে বদলি নামা লাওতারো মার্তিনেজ ও এনজো ফার্নান্দেজের শট লক্ষ্য পৌঁছায়নি। তারপর শুরু টাইব্রেকার নাটক।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker