রাউন্ডটেবল গ্লোবাল হল একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী শিক্ষা ও উন্নয়ন সংস্থা যা বিশ্বে প্ল্যানেট সচেতন এবং সিম্বিওটিক নেতৃত্ব নিয়ে আসার জন্য নিবেদিত। রাউন্ডটেবল সৃজনশীল এবং কর্পোরেট বিশ্বকে উত্তেজনাপূর্ণ এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী শিক্ষার পরিবেশে একত্রিত করে। আমরা দুটি সংস্কৃতির মধ্যে সিম্বিওটিক সম্পর্ক তৈরি করতে আগ্রহী যেখানে রূপান্তর, উদ্ভাবন এবং নেতৃত্বের একটি নতুন শৈলী অনায়াসে হয়ে যায়।
২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনভিত্তিক শিক্ষা ও সংস্থা ”Roundtable Global ” প্রতিবছর শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও ব্যাক্তি ক্ষমতায়নে অবদান রাখার জন্য প্রতিবছর বৈশ্বিকভাবে ১২ টি ক্যাটাগরিতে সহস্র নমিনির মধ্যে ১২ জন তরুণকে “Global Youth Award” প্রদান করে থাকে। প্রতিবারের মত এবারও ” Global Youth Award 2022″ এর ক্যাটাগরিতে নমিনেশন গ্রহণ করা হয়েছে।সেখানে ”E”ucational Change Award” ক্যাটাগরীতে নমিনেশন পেয়েছে বাংলাদেশের এস.এম সামমাম সাকতি ইবনে সাহাদাত সহ বেশ কিছু তরুণ ও তাদের অধীনে পরিচালিত বিভিন্ন যুবসংস্হা।
লিংক – (https://thecamdenclub.co.uk/events/november-12th-2022/)
প্রতিবারের মতন এবারেও অ্যাওয়ার্ডসটির জন্য ১২ টি ক্যাটাগরীতে নমিনেশন পান যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, কানাডা, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের তরুণ সমাজকর্মী। তাদের মধ্যে সামমাম নমিনেশন পান ” Education” এর “Change” ক্যাটাগরীতে। সেখানে সামমাম সাকতি এর সাথেও নমিনেশন পেয়েছিলেন বাংলাদেশের Team Bertho, যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ সংস্থা “”Medicine Encompassed ” , ফিলিপাইনের ”Carlos Manuel Eusoya” সহ লন্ডনের তরুণ যুবসংস্হা ”The Photography Foundation ”. সেখান থেকে “এসডিজি ৪ঃ মানসম্মত শিক্ষা ” নিয়ে কাজ করার পরিপ্রেক্ষিতে আগামভাবে “Global Youth Award 2022” এর “Education Change Award ” এর বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে এস.এম সামমাম সাকতি সাহাদাত কে। লন্ডনের “ক্যামডেন ক্লাবে” প্রদান করা হবে তরুণদের ” Global Youth Award 2022″.
বর্তমান ব্যস্ততা সামমাম সাকতি বর্তমানে “আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরষ্কার” প্রদানকারী সংস্হা “ কিডস রাইট” এর সহায়তায় বিশ্বব্যাপী প্রায় ১0 টি দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে শতাধিক শিক্ষিত জনমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে “এডুকেশন ফর অল” প্রজেক্টের নেতৃত্ব প্রদান করছেন। লকডাউন কেটেছে বাংলাদেশে। এ সময় পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রেখেছেন তিনি। কাজ করছেন সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস ফোর বা কোয়ালিটি এডুকেশন এবং ক্লাইমেট অ্যাকশন নিয়ে। তাছাড়া জাতিসংঘের অনলাইন মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনসের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম ছাত্র সংস্থা ‘আইসেক’-এর এক্সচেঞ্জ পার্টিসিপেন্ট হিসেবেও কাজ করছেন। কাজ করেছেন আমেরিকাভিত্তিক নন প্রফিট অর্গানাইজেশন “ইউনাইট ২০৩০” এ ইয়ুথ ডেলিগেট হিসেবে। ২০২১ সালের জুনে কোয়ালিটি এডুকেশনে কাজের উদ্দেশ্যে মিসরের কায়রোতে দুই মাসব্যাপী এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে যাবার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির জন্য বিষয়টি ভেস্তে যায় ।
বেড়ে ওঠা এবং স্বপ্নের বাঁক বদল
শহরেই বেড়ে ওঠা সামমাম সাকতির। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার মিরপুরে। তার বেড়ে ওঠার একমাত্র সঙ্গী ছোটো ভাই সায়েদ সাকতি। বাবা এস এম সাহাদাত হোসেনের হাত ধরে শুরু তার স্কুলজীবন মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুলে। ছোটবেলা থেকে গণিত ছিল তার প্রিয়। এটা হয়তো বাবার কারণেই হয়েছে। সামমাম সাকতির বাবা ছিলেন অধ্যাপক। গণিত পড়াতেন। বাবার পছন্দেই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে পড়েন তিনি। কলেজও ছিল শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ। সামমাম এর সফলতার চাবিকাঠী যপন তার মা রত্না পারভীন রুপা। মা স্বপ্ন দেখতেন, তার ছেলে শহরের বড় ডাক্তার হবে। মানুষের সেবা করবে। তাই ছেলেকে মানবিক গল্প শোনাতেন মা। সামমামও তার কৃতিত্বের চালিকা শক্তি মনে করেন তার মা -কে। সামমাম বলেন, ‘আমি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতাম মূলত আমার মায়ের অনুপ্রেরণায়। মায়ের লক্ষ্য পূরণের জন্য আমি সব চেষ্টা করতাম। তবে ২০১৮ সাল সব ওলটপালট করে দিল। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কিছুদিন আগে বাবা পাড়ি দেন আকাশের দেশে। ফলে এইচএসসি পরীক্ষার ফল আশানুরূপ হয়নি। এতে করে মেডিকেল পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়াও হয়ে ওঠেনি। বুঝতে পারলাম, জীবনের সব স্বপ্ন হয়তো পূরণ হয় না। তাই বলে থেমে থাকাও যায় না।সেই মুহুর্তে মা শেখালেন নতুন করে স্বপ্ন দেখার। এখন স্বপ্ন দেখি নাসার অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার। সেই লক্ষ্যে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছি।’
যারা অ্যাওয়ার্ডটির জন্য আবেদন করতে চান…
সামমাম বিশ্বাস করেন তরুণরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তরুণরাই বদলে দেবে আগামীর বিশ্ব। তার মতো যারা বিশ্বাস করেন তারুণ্য, যারা বিশ্বাস করেন তাদের নেতৃতব গুণাবলী দ্বারা বিশ্ব এগিয়ে যাবে উন্নতির শিখরে,তাদের জন্ন্যই মুলত ” Global Youth Award 2022″। যার আয়োজক Roundtable Global Organizations. প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর অক্টোবরে অ্যাওয়ার্ডসটির জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু করে ।আবেদনকারীরা https://www.roundtable.global/global-youth-awards-2022
টির মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
গবেষণা ও অর্জন
স্কুল থেকেই একটু ভারিক্কি বিষয়ে মনোযোগ সামমামের। নতুন কিছু পেলেই তা খুঁটিয়ে দেখার অভ্যাস। খুটুর-খাটুর; তারপর লেগে পড়তেন গবেষণায়। খেলাধুলার প্রতি ও তার ব্যাপক আগ্রহ! মাধ্যমিকে পড়ার সময় ‘ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দানকারী তত্ত্ব’ নামের এক প্রজেক্ট উদ্ভাবন করেন। প্রজেক্টটি তার হাতে জাতীয় পুরস্কার এনে দেয়। এখনও সেই প্রজেক্ট নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন সামমাম। এই গবেষণায় সফল হলে হয়তো ভূমিকম্পের দুই সপ্তাহ আগেই পরপর দু’বার পাওয়া যাবে বিশেষ সংকেত। এই সংকেত পাওয়ার পর নেওয়া যাবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি। স্কুলে পড়ার সময় অভিনয়ও করেছেন তিনি। মিরপুর সাংস্কৃতিক পরিষদের নাট্যদলে কাজ করেছেন। ‘আজব ডাক্তার’ নাটকে মূকাভিনয় করে সেরা অভিনেতার পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি। তবে ইউনিভার্সিটিতে সবাই তাকে সেরা বক্তা হিসেবেই চেনে। সামমামও বলেন, ‘আমি আসলে বক্তৃতাতেই পারদর্শী।’ তাছাড়াও দিনকয়েক পুর্বে তরুণদের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্য পূরণের বিশ্বমঞ্চ ইউনাইট ২০৩০ গ্লোবাল ইয়ুথ অ্যাকশন ফর বেটার ওয়ার্ল্ড ক্যাম্পেয়িনে সর্বোচ্চ ৯৯টি অ্যাকশন ও ২৬৬০ পয়েন্ট অর্জন করে ‘মোস্ট অ্যাসপিরিন ইয়ুথ অ্যাকটিভিস্ট’-এর টাইটেল আনলক করেছেন।এর পাশাপাশি সমাজকর্মের জন্য নেপালের ভাইস প্রেসিডেন্ট নান্দ কিশোর পুন এর কাছ থেকে “গ্লোবাল ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডস ২০২১” সহ “IGEN IVD Volunteer Award 2021″,” Visionary Leadership Award”, “APJ Abul Kalam Youth Award 2021″, ” 6th Asia Pacific Luminare Award” অর্জন করেছেন তিনি