গাজীপুর

প্রেমের কারণেই খুন হয় কালিয়াকৈরে ইমন র‌্যাবের হাতে আটক দুই আসামীর স্বীকারোক্তি

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রসুলপুর গ্রাম থেকে নিখোঁজের ১০দিন পর আমিন বাজার কেবলার চর এলাকা থেকে তুরাগ নদ থেে ইমনের লাশ উদ্ধারের ১০দিন পর উত্তরা র‌্যাব-১ সদস্যরা হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করেছেন। আটককৃতরা হলো, কালিয়াকৈর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে রাশেদুল ইসলাম রাসু (২২) কালামপুর গ্রামের রতন চন্দ্র বর্মনের ছেলে বিপুল চন্দ্র বর্মন (১৯)। র‌্যাব-১ সদস্যরা আটককৃতদের কাছ থেকে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত ১টি দারালো দা, ১টি মোবাইল সেট উদ্ধার করেছেন বলে বুধবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সহকারী পুলিশ সুপার, হকারী পরিচালক, পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) অধিনায়কের পক্ষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়,১৬ জুলাই শনিবার বিকেলে ঢাকা জেলার সাভারস্থ আমিন বাজার কেবলার চর এলাকার তুরাগ নদীতে একটি লাশ ভাসমান অবস্থায় নৌ-পুলিশ উদ্ধার করে। এই ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে এই মৃতদেহের মৃত্যু রহস্য এবং প্রকৃত ঘটনা উম্মোচনের জন্য র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং এটি একটি হত্যাকান্ড হতে পারে ধারণা করে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। নিহতের নাম গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আজিবুর রহমানের ছেলে ইমন রহমান। সে গত ৭ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে মায়ের কাছ থেকে ২শত টাকা নিয়ে কাউকে কিছু না বলে বাসার বাহিয়ে যায়। এঘটনায় নিহতের পরিবার ৫দিন পর কালিয়াকৈর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করে যার নম্বর-৪৯৯ তারিখ ১১/০৭/২০২২।

এদিকে গত ১৬ জুলাই ঢাকার সাভারস্থ আমিন বাজার কেবলার চর এলাকার তুরাগ নদীতে একটি লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা নৌ-পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত লাশটি কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ভিকটিম ইমন রহমান (২১) এর বলে সনাক্ত করে। উদ্ধারকৃত মরদেহ সম্পূর্ণ পচে যাওয়ায় এটি হত্যাকান্ড কিংবা দুর্ঘটনা কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে অনুমান করা সম্ভব ছিল না। তবে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবি করেন।

র‌্যাব-১ এর হাতে আটকৃতরা ২-৩ বছর পূর্ব হতে একই সাথে মাদক ক্রয় এবং সেবনের সাথে জড়িত। তারা বন্ধু হলেও ভিকটিম ইমনের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব হতেই বিরোধ ছিল। সম্প্রতি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ভিকটিম ইমন এর সাথে আটককৃত রাশেদুল ইসলাম রাসু এর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শত্রুতা এক পর্যায় বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে রাশেদুল ইসলাম রাসু তার অপর ৪ জন সহযোগীসহ ভিকটিম ইমনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী রাশেদুল ইসলাম রাসু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গত ০৭ জুলাই ২০২২ তারিখ রাতে ইমন‘কে তার বাড়ীর পশ্চিম পাশে বটগাছতলায় আসতে বলে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে রাসু, বিপুলসহ অন্যান্য হত্যাকারীরা আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। এরপর রাতের কোন এক সময় ইমন গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন রসুলপুর বটগাছতলায় পৌঁছা মাত্রই আসামী রাশেদুল ইসলাম রাসু ভিকটিম ইমনকে তার প্রেমিকাকে গালিগালাজ করার কারণ জিজ্ঞাসা করে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে প্রধান আসামী রাশেদুল ইসলাম রাসু’র সাথে থাকা দা দিয়ে ভিকটিম ইমন’কে কোপ দেয় এবং অন্যান্য আসামীরা ধারালো অস্ত্র¿ দিয়ে ভিকটিম ইমন’কে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে ইমন (২১) নিস্তেজ হয়ে গেলে হত্যাকারীরা ইমনের লাশ যাতে কেউ খুঁজে না পায় সে উদ্দেশ্যে তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। পরবর্তীতে তুরাগ নদীতে স্রোতের কারণে লাশ সাভারের আমিন বাজারে গিয়ে ভেসে উঠে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker