বিনোদন

একটু বড় হয়ে অভিনয়ে আসুক সহজ, নইলে আমার মতো ছোটবেলাটা নষ্ট হবে: প্রিয়াঙ্কা

প্রিয়াঙ্কা সরকার আর তাঁর ছেলে সহজ। মা-ছেলে প্রায় একসঙ্গেই ক্যামেরার মুখোমুখি হতে চলেছেন ভিন্ন ছবিতে। ‘শ্রীজাত’-র ছবি ‘মানবজমিন’ দিয়ে অভিনয়ে ফিরছেন প্রিয়াঙ্কা। অন্য দিকে, বাবা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির হাত ধরে অভিনয়ে হাতেখড়ি হচ্ছে ছেলে সহজের।

গত ডিসেম্বরে বড় দুর্ঘটনা। পায়ের হাড় টুকরো টুকরো হয়ে শয্যাশায়ী। তিন মাস পরে শুক্রবার ফের লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের চেনা রুটিনে প্রিয়াঙ্কা। শ্যুটিংয়ে উপস্থিত আনন্দবাজার অনলাইন। পর্দার ‘কুহু’ চরিত্রের খাতিরে ঘাড় ছোঁয়া কোঁকড়া চুল। ফুল ছাপ প্যাস্টেল রঙা সালোয়ার-কামিজ। পায়ে ব্লক হিলের স্যান্ডাল। নন্দন চত্বরে অল্প যেন দুলে দুলে হাঁটছিলেন অভিনেত্রী।

গত তিনটে মাস কেমন ছিলেন প্রিয়াঙ্কা? এখন কী অবস্থা? একটানা কিছু ক্ষণ শ্যুটের পর বিরতিতে প্রশ্ন করতেই একগাল হাসি। ‘‘আগের থেকে অনেকটাই ভাল। হাঁটতে অসুবিধে নেই। তবে পায়ে ব্যথা আছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, আবার আগের মতো হয়ে যাব। তবে শ্যুটে খুব সমস্যা হচ্ছে না। ভালই হাঁটতে পারছি। ভয় হয়েছিল, আর বোধহয় উঠে দাঁড়াতেই পারব না।’’ যদিও একটানা এক্ষুণি হাঁটছেন না প্রিয়াঙ্কা। তাতে পায়ে হাল্কা টান ধরছে।

বিছানায় টানা তিন মাস। কথা তুলতেই দাবি— একটু যে মনখারাপ হয়নি তা নয়। অবসাদও গ্রাস করেছিল। সবাই কাজ করছেন। আর তিনি বিছানায় শুয়ে। কার ভাল লাগে? সঙ্গে পায়ে অসহ্য ব্যথা। তবে সেই ফাঁক ভরে দিয়েছে ছেলে সহজ। প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘‘সারা ক্ষণ শ্যুট, ফটো শ্যুটে ব্যস্ত। ছুটি নেই। ছেলের সঙ্গও নেই। সেখানে গত তিনটে মাস শুধু সহজ আর আমি। খুব ভাল লেগেছে। মনে হল দেখতে দেখতে ছুটি ফুরিয়ে গেল।’’

তবে এ বার আর একা মা নয়, ছেলেও অভিনেতা! বাবা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম পরিচালনা ‘কলকাতা ৯৬’-তে ক্যামেরার মুখোমুখি সহজও। ফের হাসি প্রিয়াঙ্কার মুখ। বললেন, ‘‘আরও ছোট বয়স থেকে ডাক পাচ্ছিল। ‘ক্রিসক্রস’ ছবিতে ডেকেছিলেন বিরসা দাশগুপ্ত। আমি রাজি হইনি। এখন মনে হচ্ছে, যা হয়, তা ভালর জন্যই হয়। বাবার প্রথম ছবিতে ছেলের অভিনয়ে হাতেখড়ি। এর থেকে ভাল ব্যাপার আর কী হতে পারে?’’ তার পরেই খানিক আনমনা। তত ক্ষণে প্রিয়াঙ্কাকে ঘিরে ধরেছে মাতৃসত্তা। একটু থেমে নিজেকেই যেন শোনালেন, “আরও বড় হয়ে অভিনয়ে আসাটাই ভাল। নইলে ছেলেবেলা নষ্ট হয়ে যায়।”

বলতে বলতেই নিজের ছোটবেলা যেন সামনে এসে দাঁড়াল অভিনেত্রীর। বললেন, ‘’১২ বছর বয়স থেকে অভিনয়ে। আমি জানি এর কষ্ট। সহজ তো অভিনয় করবে বলে লাফাচ্ছে। ও বোঝে না, গরমে শ্যুট করা কত কষ্টের! ব্যক্তিগত জীবন বলেই কিছু থাকবে না আর। স্কুলে যেতে পারবে না নিয়মিত। রাস্তায় বেরোলেই সবাই ছেঁকে ধরবে। স্কুলে বন্ধুরা সারা ক্ষণ শ্যুটিংয়ের গল্প শুনতে চাইবে। এখনই ওকে টেনে নিয়ে গিয়ে অনেকে সেলফি তুলতে চান! প্রিয়াঙ্কার ছেলে হিসেবে। আবাসনের অনেকে জানিয়েছেন। এটা কি খুব নিরাপদ ওর পক্ষে? মা হয়ে এ সব কী করে মেনে নিই!’’

সহজ কী চায়? প্রিয়াঙ্কা জানালেন, অনেক কিছুই হতে চায় সে। কখনও বলে অভিনয় করবে। কখনও বলে, প্রত্নতাত্ত্বিক হবে। খননের কাজে যোগ দিয়ে মাটির নীচ থেকে মণি-মুক্তো তুলে আনবে। ওর বিশ্বাস, মাটির নীচে এ সব থাকে। আবার কখনও সহজ বলে, ইউটিউবার হবে। এখন থেকেই যেমন অভিনয়ে, তেমনই ভিডিয়োগ্রাফিতে পোক্ত সে! অভিনেত্রীর মায়ের ইচ্ছে, ‘‘অভিনয়ে আসতে চাইলে বাধা দেব না। ওটা ওর রক্তে। তবু বড় হয়ে যেন আসে। এখন তো স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সহজ ভাবে মিলেমিশে বড় হয়ে ওঠার বয়স সহজের।’’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker