কৃষি ও পরিবেশ

পৃথিবীর রহস্যময় তিনটি স্থান

আমাদের পৃথিবী যতটা সুন্দর ঠিক ততটাই রহস্যময়। রহস্যময় পৃথিবীর কিছু স্থান আছে যেগুলো সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি তথ্য পাননি বিজ্ঞানীরা। তবে বিজ্ঞানীরা সবসময় চেষ্টায় আছে এই স্থানগুলোর রহস্য উদঘাটনে। চলুন আজ জেনে নেই পৃথিবীর তিনটি রহস্যময় স্থান সম্পর্কে।

* ডোর টু হেল, তুর্কমেনিস্তান
তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির মধ্য অবস্থিত দোয়াজ গ্রামে। এই গ্রামে একটা গর্ত রয়েছে যেখানে ৪৭ বছর ধরে আগুন জ্বলছে।  পৃথিবীর মানুষের কাছে নরকের দরজা হিসেবে পরিচিত এই গর্ত। আসলে এই গর্ত প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ স্থান। ১৯৭১ সালে সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজে এসেছিলেন৷ দোয়াজ গ্রামে খনন করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। খনন শুরুর কিছু সময় পর উপরের অংশ ভেঙে পরে যায় এবং বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়। যা ২০০ ফুট চওড়া, ৬৬ ফুট গভীর। ফলে প্রচুর পরিমাণ মিথেন গ্যাস বের হতে থাকে, যা মানুষ এবং প্রকৃতি উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। এর আউটপুট বন্ধ করা প্রয়োজন ছিল, তাই বিজ্ঞানীরা এই গর্তে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিল সপ্তাহ খানেক এই আগুন জ্বলবে। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত করে ৪৭ বছর যাবৎ আগুন জ্বলে চলছে। প্রতিবছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক এই গর্ত দেখতে আসেন।

Mission 90
* মীর মাইন, সাইবেরিয়া

সাইবেরিয়াতে অবস্থিত মীর মাইন একসময় বিশ্বের সব থেকে বড় হীরার খনি ছিল। এখান থেকে ১ কোটি ক্যারেট হীরে প্রতি বছর উত্তোলন করা হতো। হীরে শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত এক গর্তে পরিণত হয় স্থানটি। এটার গভীরতা ১৭২২ ফুট, চওড়া প্রায় ৩৯০০ ফুট। সুরক্ষার কারণে বর্তমানে মীর মাইলের ওপর নো ফ্লাইং জোন ঘোষণা করা হয়েছে। গর্তের ওপর দিয়ে যখন হেলিকপ্টার যায় তখন হেলিকপ্টারকে কোনো শক্তি নিচের দিকে টেনে ধরে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, মীর মাইন খুব গভীর হওয়ার কারণে খনির নিচের বায়ু ভূঅভ্যন্তরের উষ্ণতার কারণে গরম হয়ে হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে আসে। আর এই শূন্য স্থান পূরণের জন্য ওপরের বায়ু নিচে নেমে যায়। বায়ুর এই ওঠা নামার কারণে খনির ওপরে ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়। তাই ওই স্থানের ওপরে গেলে হেলিকপ্টার কিছুটা নেমে যায়।

Mission 90
* ইস্টার দ্বীপ, চিলি

পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপে মানুষের মতো দেখতে মূর্তির জন্য খুবই বিখ্যাত। এই মূর্তিগুলো ১২ ফুট থেকে ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা। মূর্তিগুলোর শীরের বেশিরভাগ অংশ মাটির নিচে। শুধুমাত্র মাথা ও বুকের কিছু অংশ মাটির ওপরে। চিলির মূল ভূখণ্ড থেকে ৩৫০০ কি.মি. দূরে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপে প্রায় ১০০০ হাজার মূর্তি রয়েছে। মূর্তিগুলো পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছিল। সাতটি বৃহৎ আকারের মূর্তি এই দ্বীপের মূল আকর্ষণ। এগুলোকে নেভাল অব দ্য ওয়ার্ল্ড বলা হয়। ১৯৯৫ সালে ইউনেস্কো এই দ্বীপকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে এই নির্জন দ্বীপে কারা কি উদ্দেশ্যে এই মূর্তিগুলো স্থাপন করেছিল তা আজও জানা যায়নি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker