কালিয়াকৈরে বাকি থাকা একটি ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনে আপন চাচা ও ভাতিজা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। নিবার্চন জমে উঠলেও চাচা-ভাতিজা প্রতিদ্বন্দ্বীতার খবরে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অপর দিকে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগ। উল্লেখ গত ২৮ নভেম্বর গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভা ও ৭ টি ইউনিয়ন নির্বাচন হলেও বাকি ছিল ২টি মৌচাক ইউনিয়ন ও শ্রিফলতলী ইউনিয়ন, এর মধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারী শ্রিফলতলী ইউনিয়ন নির্বাচনের দিন তহসিল ঘোষনা করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও উপজেলা নিবার্চন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর কালিয়াকৈর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ ও কালিয়াকৈর পৌরসভার নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে মামলা জটিলতার কারণে উপজেলার শ্রীফলতলী ইউনিয়ন পরিষদের নিবার্চন বন্ধ ছিল। অবশেষে সকল জটিলতা কাটিয়ে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ওই শ্রীফলতলী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর এখানে নিবার্চন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ লক্ষ্যে ভোটারদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ইউপি নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আপন চাচা ও ভাতিজা চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন।
তারা হলেন, ওই ইউনিয়নের বড়ইতলী এলাকার মৃত অমূল্য কুমার সাহার ছেলে রতন শাহা, ও তার আপন বড় ভাই নিরঞ্জন সাহার ছেলে রাজিব সাহা। এবারের নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে চাচা রতন সাহা চশমা প্রতীক ও তার ভাতিজা রাজিব সাহা ঢোল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে ওই ইউনিয়নে নিবার্চন জমে উঠলেও আপন চাচা-ভাতিজা প্রতিদ্বন্দ্বিতার খবরে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজিব সাহা (ঢোল প্রতীকে) জানান, আমার চাচা যেহেতু ভালো মনের মানুষ এবং শিক্ষিত সমাজ গড়ার জন্য কাজ করতেছেন, সেহেতু আমি নির্বাচন থেকে সরে যাবো এবং চাচার চশমা প্রতীক নিবার্চনের কাজ করব।
চেয়ারম্যান প্রার্থী রতন সাহা (চশমা প্রতীক) জানান, আমি চশমা প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতেছি। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চলছে। আর আমার ভাতিজা ঢোল প্রতীকে প্রার্থী হলেও সে মূলত নিবার্চন করছে না। সে আমাকে সমর্থন দিয়ে আমার নিবার্চনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা নিবার্চন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা এ এম শামসুজ্জামান জানান, শ্রীফলতলী ইউনিয়ন নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, সংরক্ষিত আসন পদে ১২ জন ও সাধারণ আসন পদে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ওই ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৪ হাজার ৪৮২ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ১৫৪ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৩২৮ জন।
অপরদিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনে নৌকার মনোনিত প্রার্থী হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজিবুর রহমান। তার নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় গত ৩০ জানুয়ারি বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপদি ফরহাদ হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এছাড়া একই কারণে গত ১ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি সোহেল রানাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল জানান, কেন্দ্রীয় কার্যনিবার্হী কমিটির নির্দেশ মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।