কুমিল্লা

বাগবিতণ্ডায় ক্ষিপ্ত পরকীয়া প্রেমিকা, হত্যা করেন পুতা দিয়ে

কুমিল্লা নগরীতে নিজ বাসা থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হওয়া যুবকের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: সোহান সরকার জানান, ওই যুবকের সঙ্গে এক নারীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন পরকীয়া প্রেমিকাই ওই যুবককে পুতা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারী হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এর আগে গত রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর চৌমুহনী এলাকার বাসা থেকে নিহত ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই দিন রাত ১১টার দিকে মুখমণ্ডল ও শরীর রক্তাক্ত দেখে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সহিদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত গোলাম রাফি সরওয়ার (৩৫) নুরপুর এলাকার মৃত আনোয়ার হেসেনের ছেলে। তিনি ওই এলাকায় মোবাইল ব্যাংকিং ও মোবাইল ফোনের রিচার্জের ব্যবসা করতেন।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান সরকার বলেন, হত্যার ঘটনায় নিহতের মা সৈয়দা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গুলশান আরা বেগম ওরফে রোকসানা আক্তার (৩৪) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী আবুল খায়েরের স্ত্রী রোকসানা আক্তার ভাড়া থাকেন কুমিল্লা নগরীর নুরপুর উত্তরপাড়া চৌমুহনী মোড় এলাকার মদন ভেন্ডারের বাড়িতে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

স্বীকারোক্তিতে রোকসানা বলেছেন, তার স্বামী সৌদি আরবপ্রবাসী। নিহত রাফি সারোয়ারের সঙ্গে তার দুই বছর ধরে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গত শনিবার রাফির মা তাঁর বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাফি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রোকসানাকে তার নিজ বাসায় আসতে বলেন। রোকসানা সেখানে গেলে রাফি ও তার মধ্যে কথা-কাটাকাটি এবং বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রোকসানা রাফিকে বাসায় থাকা পুতা দিয়ে কপালে, মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে রাফির মৃত্যু হয়। হত্যার পর রাফির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান সরকার আরো বলেন, মামলাটির তদন্ত অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় আরো কিছু আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker