পটুয়াখালীসারাদেশ

গৌরবের ৫১ বছরে গলাচিপা সরকারি কলেজ

মাহমুদুল হাসান লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী):
গলাচিপা সরকারি কলেজ (পূর্বে গলাচিপা ডিগ্রি কলেজ) নামেই যার পরিচয়। শুধু উপজেলা নয়,বরিশালে বিভাগের মধ্যে রয়েছে এই কলেজের সুনাম ও কৃতিত্ব। পটুয়াখালী জেলার অন্যতম সেরা এই বিদ্যাপীঠটি বহু ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী। ২০১৮ সালে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর সুনাম অর্জন করে এই কলেজেটি। ভালো ফলাফল ও আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি কলেজটিকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পছন্দের কলেজ হিসেবে পরিচিত করেছে।
ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক গলাচিপা সরকারি কলেজ ইতোমধ্যে পার করেছে ৫০ টি বছর। শত বাধা পেরিয়ে আজ (১ জুলাই ) ৫১ বছরে পদার্পণ করলো কলেজটি, শুভ জন্মদিন গলাচিপা সরকারি কলেজ। গলাচিপা সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে যে লক্ষ্য নিয়ে উপকূল তীরবর্তী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , তা অব্যাহত থাকবে- এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা সরকারি কলেজ” গলাচিপা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে ১১ একর জমি নিয়ে অবস্থিত। ১৯৬৯ সালে ১ জুলাই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গলাচিপা সরকারি কলেজ বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার অন্তর্গত একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট, ডিগ্রি কোর্সে সার্টিফিকেট প্রদান করে।
১৯৬৯ সালের ১ জুলাই  শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, ১৯৭২ সালে বি.এ(পাস) কোর্স ও ১৯৯৮ সালে স্নাতক শ্রেনী খোলা হয়। ১ জানুয়ারি ১৯৮০ তারিখে কলেজটিকে প্রথম এমপিওভুক্ত করা হয়। ২০১৯ সালের ৮ অগাস্ট কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়।
এদিকে, বর্তমানে কলেজটিতে এইচএসসি (ইন্টারমিডিয়েট) মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য শাখা, কারিগরি শাখা, ডিগ্রি, ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি কোর্স চালু রয়েছে।
প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় কলেজটি মুখরিত থাকে ।  ইন্টারমিডিয়েট, ডিগ্রি কোর্স চালু রয়েছে। রয়েছে সক্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনগুলো শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে বেশ অবদান রাখছে। বর্তমানে কলেজটিতে  শিক্ষক, শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসেবে ৬২ জনের মত নিযুক্ত রয়েছে।
অন্যদিকে, আধুনিকতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কলেজটি। এখানকার প্রতিটি ভবনের নকশা মনোমুগ্ধকর। এছাড়া কলেজটিতে রয়েছে ছাত্র সংসদ, অডিটোরিয়াম,শহীদ মিনার, কলেজ দীঘি, লাইব্রেরি,কম্পিউটার ল্যাব, ছাত্রাবাস পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে এই কলেজে রয়েছে রোভার স্কাউটস, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পাখি ডাকা,ছায়া ঘেরা নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বাগানে ফুলের রাজত্ব কলেজ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এই কলেজ আলো ছড়িয়েছে সর্বত্র তৈরি করেছে বহু গুনী মেধাবী মানুষ যারা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
গলাচিপা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক শুভ হাসান আলী জানান কলেজটি উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্বেও আধুনিক শিক্ষা ও চিন্তা ভাবনার ধারক বাহক এই কলেজটির রয়েছে নানা অবদান, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে কলেজটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে শিক্ষাঙ্গনে এই কলেজের সুনাম সর্বত্র ছড়িয়ে পরুক এই কামনা করি।
গলাচিপা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফোরকান কবির  বলেন,করোনা কালীন মূহুর্তে লকডাউন চলায় কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে না । সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থীসহ গলাচিপার নবীন-প্রবীণ গুণী মানুষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকির শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন
গলাচিপা সরকারি কলেজ দক্ষিণ অঞ্চলের একটি সনামধন্য কলেজ হিসেবে পরিচিত আধুনিক  পাঠদান পদ্ধতি, শিক্ষক – শিক্ষিকার আন্তরিকতা,শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কলেজটির সুনাম ও কৃতিত্ব অর্জনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে। কলেজটি ২০১৮ সালে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর সুনাম অর্জন করে এই ধারা অব্যাহত থাকবে আশা করি।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কলেজ ক্যাম্পাস প্রতিটি শিক্ষার্থীর ও গলাচিপার মানুষের কাছে পছন্দের জায়গায় স্থান পেয়েছে অনেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসে এখানে। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকির এই দিনে তাই কলেজের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছে সবাই।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker