বাণিজ্য

বাজার পরিস্থিতি : পেঁয়াজ তেল সবজির দামে আবারও অস্বস্তি

ঈদের পর বাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামে হঠাৎ আবার অস্বস্তি শুরু হয়েছে। পেঁয়াজের ভরা মৌসুম এখন। এর পরও কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। গত মঙ্গলবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়েছে।

সয়াবিনের বিকল্প পামতেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১২ টাকা। সবজির সরবরাহ কমায় প্রায় সব ধরনের সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। তবে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে আলু, ডিম ও মুরগিসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এদিকে বাজারে নির্ধারিত নতুন দরের তেল না এলেও দাম বাড়ার ঘোষণায় খুচরা ব্যবসায়ী অনেকে বোতলজাত পুরনো সয়াবিন তেল নতুন দামে বিক্রি করছেন।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে তদারকি না থাকায় ব্যসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছেন। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে বাজারে অস্থিরতা বাড়বে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় হঠাৎ পাইকারিতে দাম বেড়েছে। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আসে ফরিদপুর থেকে। ফরিদপুরে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ঢাকার বাজারে এর প্রভাব পড়ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় প্রতি কেজি ভালো মানের পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাজারে নির্ধারিত নতুন দরের সয়াবিন তেল এখনো আসেনি।

বাজারে বোতলজাত তেলের সংকট থাকায় অনেকে এই সুযোগ নিচ্ছেন। পুরনো বোতলজাত তেল বিক্রি করছেন নতুন দামে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য বলছে, গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪৬ টাকায়।

বাড্ডার খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. হেলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ নেই। কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদন করে বাজারে ছেড়ে দিয়েছেন। এই সুযোগে মুনাফালোভী কিছু বড় ব্যবসায়ীরা মজুদ বাড়িয়ে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন।’

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কমেছে ঠিকই, তবে দাম বাড়ার হার অস্বাভাবিক। সিন্ডিকেটও সক্রিয় রয়েছে, যারা কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে মুনাফা লুটছে। পুরনো বোতলজাত তেল নতুন দামে বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে একাধিক খুচরা ব্যবসায়ী বলছেন, দাম বাড়ানোর ঘোষণার কয়েক দিন আগে থেকে ভোজ্য তেল সরবরাহকারী কম্পানির ডিলাররা আগের দামে আর তাঁদের কমিশন দিচ্ছিলেন না। ডিলাররা কমিশন ছাড়াই বোতলের গায়ের দামেই খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তেল বিক্রি করছেন।

ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে বোতলের গায়ের আগের দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন। বাজারে নতুন করে পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। মহাখালী কাঁচাবাজারে বাজার করতে এসে সাদিকুল ইসলাম ও মঞ্জরুল হক নামের দুজন ক্রেতা বলেন, নতুন করে কারসাজি শুরু। একদিকে কৃষক পেঁয়াজের দাম পাচ্ছেন না, অন্যদিকে ভোক্তাদের বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। লাভ চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।

পাইকারি, মোকাম ও আড়তে এখন থেকে নজরদারি না বাড়ালে পেঁয়াজের দাম আরো বেড়ে যাবে।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে এখন ঝিঙা ও লাউ দামি সবজি। ঝিঙা প্রতি কেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৮০ টাকা। বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটোল ৮০ থেকে ৯০ টাকা।,

চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শজনে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও দেশি শসা ৮০ টাকা। প্রতি পিস চালকুমড়া ৬০ টাকা।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker