জাতীয়

যখন ১০০ মিলিয়ন মানুষ আপনাকে চেনে, তখন হাঁটাটা একটু কঠিন হয়ে পড়ে

প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক পোস্টে বেইলি রোডে বসবাসের দুটি মাসের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। হাঁটার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, “হাঁটা শুধু শরীরের জন্যই নয়, মানসিক চাপও কমায়। কিন্তু যখন আপনার মুখ ১০০ মিলিয়ন মানুষ চেনে, তখন হাঁটাটা একটু কঠিন হয়ে পড়ে। আজ সকালে হাঁটতে হাঁটতে অনেকেই সালাম বিনিময় করেছেন, কিছু সেলফি তোলার অনুরোধও এসেছে। তবুও, পুরো হাঁটার সময়টা ছিল এক আনন্দময় যাত্রা।”

তিনি লেখেন, “বেইলি রোডে আমাদের বসবাসের আজ দু’মাস পূর্ণ হয়েছে। এই অল্প সময়ে যেন ফিরে গেছি শৈশবের দিনগুলিতে। চারপাশে গাছপালা ভরা, পাখিদের কিচিরমিচির। কাকের উপস্থিতি নেই, তবে শকুনের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। আর হ্যাঁ, খুব একটা শোনায় না তাদের তীক্ষ্ণ ডাক। মাঝে মাঝে কেবল শোনা যায় কোয়েলের মিষ্টি ডাক, যেন সকালে সূর্যের প্রথম আলো জানান দিচ্ছে।”

তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে হাঁটার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন।তিনি লিখেন,লুনা কিছুদিন আগে যে ভয়টি নিয়ে থাকতো, সেটা কাটিয়ে উঠেছে। তার ভয়ের বিষয় ছিল, কোনো পাগল লোক যদি তার স্বামীকে আক্রমণ করে! আমরা দুজনেই হাঁটতে খুব ভালোবাসি। কিন্তু গত দু’মাসে আমরা প্রায়ই বাড়ির বাইরে বের হতে পারিনি। আমার ফ্ল্যাট থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে রমনা পার্ক হলেও, সেখানে হাঁটতে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে আজ সকালে, লুনা আর আমি সেই পুরনো ভয় কাটিয়ে পুরো পার্কটি হাঁটলাম। চারপাশে পাখির গান, এবং মাঝে মাঝে হাসির ক্লাবের হালকা হাসির আওয়াজ আমাদের সঙ্গী হয়ে ছিল।”

শফিকুল আলম তার হাঁটার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,আমার হাঁটু প্রায় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছে। বহু মাস পর আজ আমি আবার স্বাভাবিক গতিতে হাঁটতে পারছি। হাঁটার আনন্দে যেন শরীরে সুখের হরমোনগুলো একসাথে কাজ করতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন,“কিছুদিন ধরে আমি নিজে মাঝে মাঝে উদ্বিগ্ন থাকি , বিশেষ করে কাজের চাপ এবং কথাবার্তার কারণে। তবে হাঁটা হচ্ছে সেই উদ্বেগের সবচেয়ে বড় ঔষধ। তবে, যখন আপনার মুখ দেশের প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ চিনে, তখন হাঁটতে বেরোলে কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। আজ সকালে হাঁটতে হাঁটতে অনেকেই সালাম বিনিময় করেছেন, কিছু মানুষ সেলফি তোলার অনুরোধও করেছেন। তবে, আজকের এই শেষ বসন্তের সকালে পুরো হাঁটাটাই ছিল এক অপূর্ব আনন্দের যাত্রা।”

এছাড়া, শফিকুল আলম গত রাতের কালবৈশাখী ঝড়ের স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, “গত রাতে শহর প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ের সম্মুখীন হয়। রমনা এবং বেইলি রোডের ঝড়টা ছিল যেন আমার শৈশবের মতিঝিল এজিবি কলোনির সেই কালবৈশাখী ঝড়ের মতো। ঝড় শুরু হয় বালি, ধুলো, শুকনো পাতা উড়িয়ে, আর তারপর পুরনো গাছগুলোকে আছড়ে পড়তে থাকে। গাছগুলো যেন জানতো, তাদের যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করতে হবে। প্রতি বছর এক বা দুইটা গাছ হয়তো উপড়ে পড়ে, কিন্তু বাকিগুলো শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। তারা দুলতে থাকে, পাখিরা আকাশের শীর্ষে উড়ে চলে যায়। তবুও কোনোভাবে তারা বেঁচে থাকে, বেঁচে থাকতে হয়, নইলে তারা মিস করবে বাংলার সেই সুন্দর গ্রীষ্ম আর বৃষ্টিভেজা বর্ষাকাল “

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker