অর্থনীতি

টিআইএন থাকলেই ন্যূনতম ২০০০ টাকা কর দিতে হবে না

কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলেই অন্তত ২০০০ টাকা কর দেওয়ার যে প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাদের আয়কর যোগ্য আয় থাকবে না, তাদের আর কর দিতে হবে না।

রবিবার (২১ জুন) জাতীয় সংসদে ন্যূনতম ২০০০ টাকা করের এই প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং আরো কিছু সংশোধীনসহ অর্থবিল ২০২৩-২৪ পাস করা হয়েছে। আজ সোমবার প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে।

গত রাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল অর্থবিল পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটির সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি করা হয়। বিলের বিরোধিতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও গণফোরাম সদস্যরা। তাঁরা সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কি না সেই প্রশ্নও তোলেন।

বিলের ওপর আলোচনায় অর্থমন্ত্রী কলমসহ নিত্য পণ্যের দাম যাতে না বাড়ে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ভাষণে বাজেটের কিছু পরিবর্তনের কথা বলেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অর্থবিলের ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মুজিবুল হক চুন্নু, রওশন আরা মান্নান, ডা: রুস্তম আলী ফরাজী ও গণফোরামের মোকাব্বির খান। তবে তাঁদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলের ওপর সরকারদলীয় এমপি মো: শহীদুজ্জামান সরকার ও সেলিম আলতাব জর্জ সংশোধনী আনেন এবং তা গৃহীত হয়।

নিয়ম অনুযায়ী, টিআইএন থাকলেই রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। নতুন অর্থ বছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা বর্তমানের থেকে ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হবে না। এ রেয়াতের পর কারো আয় করযোগ্য হলে তাকে নিয়ম অনুযায়ী ন্যূনতম তিন হাজার টাকা আয়কর দিয়ে হবে। আয়করদাতা ঢাকা ও সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা হলে তাকে দিতে হবে পাঁচ হাজার টাকা।

বিল পাসের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যরা টিআইএন থাকলেই দুই হাজার টাকা আয়করের বিরোধিতা করেন। তা ছাড়া বড় অঙ্কের ঘাটতি পূরণে টাকা ছাপানোর তীব্র বিরোধীতা এবং বিদেশি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাজেটে কলমসহ শিক্ষা উপকরণের দাম কমানোরও দাবি জানান বিরোধীরা। এ সময় বাজেটে ঋণখেলাপি কমানো, দুর্নীতি নির্মূল করার কোনো পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ করেন। মুদ্রাস্ফীতি উদ্বেগজনক হারে বাড়ায় বিরোধীরা নিত্যপণ্যের দাম কমানোর ব্যবস্থা নিতে অর্থমন্ত্রীকে আহ্বান জানান।

এ সময় জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী যখনই বলেন জিনিসপত্রের দাম কমাবেন, পরদিনই বেড়ে যায়। বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কি না? তিনি বলেন, সুইস ব্যাংক থেকে বাংলাদেশিদের ডলার সরিয়ে নেওয়া হলো, ওই টাকাগুলো কারা রেখেছিল। কোনো সংস্থা কি নেই, ইন্টারন্যাশনালি ভাড়া করতে পারেন না? চোরের ঘরের চোরগুলো কারা? কারা টাকা পাচার করে এসব ব্যাংকে রেখেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে বলব, জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে গ্রামের মানুষ খুব কষ্টে আছে। এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংস কেনে। তারা এক মণ ধান ৯০০ টাকা বিক্রি করে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস কেনে। এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি খাসির মাংস কেনা যায় না। এক কেজি ইলিশ মাছ কিনতে লাগে দুই মণ ধান।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker