বড় জোট গঠন করে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের জন্য এক দফা দাবিতে বিএনপির আন্দোলনে নামার উদ্যোগে ‘কোনো লাভ হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিএনপির উন্নয়ন ভালো লাগে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগে যাঁরা বিদেশে গেছে, আজকে তাঁরা এই দেশে এসে বলেন যে, কোথায় এলাম? সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক না দুবাইয়ে এলাম?’
রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মাঠে ‘হল সম্মেলন ২০২২’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল শাখা ছাত্রলীগের সমন্বিত সম্মেলন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে অসুস্থতার কারণে তিনি অংশ নিতে পারেননি।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘পদ্মা সেতু আজ বাস্তব। ইনশাআল্লাহ, আগামী জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হলে, আমরা প্রবৃদ্ধি অর্জনে নতুন মাত্রা যোগ করব। মেট্রোরেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ঢাকা এক বৃহত্তর নগরীতে পরিণত হবে। ফ্লাইওভার হওয়ার মধ্য দিয়ে আজকে ঢাকা শহরের চেহারা বদলে গেছে। ১০ বছর আগে যাঁরা বিদেশে গেছে, আজকে তাঁরা এই দেশে এসে বলে যে কোথায় এলাম? সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক না দুবাইয়ে এলাম? যে মানুষটি রাস্তার ফুটপাতে ঘুমাত, কোনো ঠিকানা ছিল না, তাঁকে ঠিকানা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের এই নেতার ভাষ্য, ‘যাঁরা লুটপাট ও বিদেশে অর্থপাচার করে দেশকে ধ্বংস করেছে এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের যাঁরা বিরোধিতা করেছে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে যাঁরা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে পতিত করেছিল—এই উন্নয়ন তাঁদের ভালো লাগে না।’
বিএনপিকে ‘ভালো লাগে না’ রোগে পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক৷ তিনি বলেন, ‘সর্বত্র উন্নয়ন দেখে সব মানুষের ভালো লাগলেও তাঁদের ভালো লাগে না। কারণ তাঁদের ভালো না লাগার ব্যামোতে-ব্যারামে পেয়েছে। এই রোগের ওষুধ আমাদের কাছে নেই। তবে জনগণের কাছে আছে। সেই ওষুধ হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান। অতীতে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাঁদের যেভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাঁরা জানে আগামী নির্বাচনেও সেই ওষুধ ব্যবহার করবে। সেই ওষুধ ব্যবহার করে জনগণ তাঁদের বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলে দেবে। সেই ভয়ও তাঁদের আছে।’
হল সম্মেলন সামনে রেখে গত ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৮টি হলে ধারাবাহিকভাবে কর্মী সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সেখানে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারাও বক্তব্য দেন। ১৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও হল শাখাগুলোর নেতাদের নিয়ে একটি বিশেষ বর্ধিত সভা করা হয়। ২৪ জানুয়ারি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করা হয়। ২৬ জানুয়ারি কমিটিগুলোর সভা হয়। রোববার সম্মেলন উপলক্ষে বিশেষ সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের উদ্যোগে ছিল ‘উৎসবের কল্পচিত্র’ ও ‘উচ্ছ্বাসের আলোকশিখা’ শীর্ষক আনন্দ-আয়োজন।