বিএনপির ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ সম্পর্কে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ধারণার অভাব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা' হিসেবে পরিচিত ৩১ দফা কর্মসূচি কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গুরুত্ব পেলেও, তৃণমূলের অনেক কর্মীর কাছে এর সুষ্পষ্ট ধারণা নেই। তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে এই রূপরেখা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে দলটির সাংগঠনিক দুর্বলতা, প্রচারণার অভাব এবং ইউপি নির্বাচনের মতো স্থানীয় ইস্যুগুলোর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ হিসেবে পরিচিত ৩১ দফা কর্মসূচি কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গুরুত্ব পেলেও, তৃণমূলের অনেক কর্মীর কাছে এর সুষ্পষ্ট ধারণা নেই। তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে এই রূপরেখা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে দলটির সাংগঠনিক দুর্বলতা, প্রচারণার অভাব এবং ইউপি নির্বাচনের মতো স্থানীয় ইস্যুগুলোর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এই পরিস্থিতির পেছনে বেশ কিছু মূল সমস্যা চিহ্নিত করা যায়:
- সংগঠনগত দুর্বলতা: যদি তৃণমূলের কর্মীরা দলের মূল কর্মসূচি সম্পর্কে অবগত না থাকেন, তাহলে দলের সাংগঠনিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে তৃণমূল পর্যন্ত তথ্য প্রবাহের ঘাটতি নির্দেশ করে।
- দৃষ্টিভঙ্গির অভাব: কর্মীরা দলের মূল নীতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষ্কার না থাকলে তারা দলীয় কার্যক্রমে পুরোপুরি যুক্ত হতে পারেন না, যা তাদের মধ্যে দিকনির্দেশনাহীনতা তৈরি করে।
- জনগণের সাথে সংযোগের ঘাটতি: ৩১ দফা হলো দলের প্রধান বার্তা যা জনগণের কাছে পৌঁছানো জরুরি। কর্মীরাই যদি এটি না জানেন, তাহলে তারা সাধারণ ভোটারদের কাছে দলের ভিশন তুলে ধরতে পারবেন না।
- প্রচারের দুর্বলতা: তৃণমূল পর্যায়ে ৩১ দফার বুকলেট বা লিফলেট সহজলভ্য না থাকা মানে প্রচার সামগ্রী বিতরণ ও সরবরাহে বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে।
কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হলেও, স্থানীয় কিছু নেতা ইউপি-মেম্বার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি ব্যবহার করে ব্যানার টাঙিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। এটি তাদের ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থকে দলের বৃহত্তর নীতির ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়ার প্রবণতাকে তুলে ধরে। এটি দলের আস্থার সংকট বাড়াতে পারে, কারণ এই নেতারা দলের আনুষ্ঠানিক বয়কট সত্বেও ব্যক্তিগত স্বার্থে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বিএনপির কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত:
- ব্যাপক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি: স্থানীয় সকল কর্মী ও নেতাদের জন্য ৩১ দফা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা। শুধু মুখস্থ নয়, এর প্রতিটি দফার গুরুত্ব ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া।
- সহজলভ্য প্রচার সামগ্রী: ৩১ দফার সহজবোধ্য বুকলেট, লিফলেট এবং পোস্টার পর্যাপ্ত পরিমাণে ছাপিয়ে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। ডিজিটাল ফরম্যাটেও এগুলো সহজলভ্য করা।
- নিয়মিত আলোচনা ও ফিডব্যাক সেশন: স্থানীয় কমিটিগুলোতে ৩১ দফা নিয়ে নিয়মিত আলোচনা সেশনের আয়োজন করা, যেখানে কর্মীরা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারবেন।
- মনিটরিং ও জবাবদিহিতা: কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এই বিষয়গুলো মনিটরিং করা এবং নিশ্চিত করা যে তথ্যগুলো সঠিকভাবে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে।
একটি রাজনৈতিক দলের সাফল্যের জন্য তার তৃণমূলের কর্মীদের ক্ষমতায়ন এবং সঠিক তথ্য প্রবাহ অত্যন্ত জরুরি।