চট্টগ্রামে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ, শেষে হাতাহাতি ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে পদযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি এবং গণমাধ্যম কর্মীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার (২০ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থেকে বিপ্লব উদ্যান পর্যন্ত পদযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে বিকেল সাড়ে ছয়টায় ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায়’ এই পদযাত্রা শুরু হয়। এতে অংশ নেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
পদযাত্রা ও বিপ্লব উদ্যানে সমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। মঞ্চের কাছেই সোয়াত টিমকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। বিকেল থেকেই নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে এনসিপি ও অঙ্গসংগঠনের মিছিল বিপ্লব উদ্যান অভিমুখে আসতে থাকে। ব্যানার, ফেস্টুন ছাড়াও মিছিলের সামনে ছিল ব্যান্ডপার্টি।
পদযাত্রায় ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ দাদার’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘এনসিপি এনসিপি, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
বিপ্লব উদ্যানে এনসিপি নেতা আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, “বীর চট্টলার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এনসিপির রাজনৈতিক লক্ষ্য, আদর্শ জনগণকে জানাবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বাংলাদেশের ৫০ বছরের জন্য রূপকল্প তুলে ধরবেন।”
এনসিপি নেতা জোবাইর আলম মানিক বলেন, “জুলাই পদযাত্রার ২০তম দিন আজ। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থান দুই নম্বর গেইট এলাকা। জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র এখনো দেখিনি। চকরিয়ায় এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। বাকস্বাধীনতা চাই। আওয়ামী লীগের পুরোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নয়, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চাই। দৃশ্যমান সংস্কার ও বিচার চাই। আমরা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাই না। তারুণ্যের স্বপ্ন পূরণ ও নতুন বাংলাদেশ চাই।”
এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিক উইংয়ের কো-অর্ডিনেশন কমিটির সমন্বয়কারী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জিলানী বলেন, “আমরা এনসিপির মাধ্যমে দলগতভাবে জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে চাই। রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন চাই আমরা। শুধু নগর কেন্দ্রিক নয়, শ্রমজীবী মানুষ, গ্রামের মানুষের আকাঙ্ক্ষাও পূরণ করতে চাই আমরা।”
তবে, অনুষ্ঠান শেষে নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলম মঞ্চ ত্যাগ করার পরপরই এনসিপির মঞ্চে অবস্থানকারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীরা ভিডিও ফুটেজ ধারণ করলে একপর্যায়ে পুলিশ ও এনসিপি সদস্যরা গণমাধ্যম কর্মীদের দিকে তেড়ে এসে মোবাইল, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।