বিবিধ

দূর্বাঘাসের আশ্চর্য গুণাবলি! জানলে মাথা ঘুরে যাবে!

বাড়ির পাশে মাঠে ময়দানে এমন কী বাড়ির উঠোনে অযত্নে বেড়ে উঠা সবার চোখে সাধারণ একটা আগাছা দূর্বা ঘাস। সামান্য সতত চোখে পড়া ঘাসটি যে কত উপকারে আসতে পারে কল্পনাও করা যায় না!

দূর্বা ঘাসের বৈজ্ঞানিক বা উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Cynodon dactylon. দূর্বা ঘাস বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন ধুব, বারমুডা গ্র্যাস, দুবো, ডগ’স টুথ গ্র্যাস, বাহামা গ্র্যাস, ডেভিল’স গ্র্যাস, কোচ গ্র্যাস, ইন্ডিয়ান দোয়াব, আরুগাম্পুল, গ্রামা, উইয়্যারগ্র্যাস এবং স্কুট্স গ্র্যাস৷

হাকিম সিরাজুল ইসলাম ও হাকিম আল-আমিন এর ভাষ্যমতে দূ্র্বা ঘাস অত্যন্ত চমৎকারি ঔষধিও গুণ সম্পন্ন, এর ব্যবহারে জটিল ও কঠিন রোগের উপশম হয়।

জানা যায়, দূর্বাঘাসের যুগান্তকারী ব্যবহার:

★ দুর্বা ঘাস সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও সম্ভাবনাময় ওষুধ। গর্ভধারণে অসমর্থ হলে দুর্বা ও আতপ চাল এক সাথে বেটে বড়া করে ভাতের সাথে সপ্তাহে তিন/চারদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।

★শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে দুর্বা ঘাস পিষে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দূর্বার শিকড় ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

★বমি বমি ভাব বন্ধের জন্য দূর্বা ঘাসের রস ২ থেকে ৩ চামচ ১ চা চামচ চিনির সঙ্গে মিশিয়ে ১ ঘণ্টা পর পর খাবেন। বমি ভাব কেটে গেলে খাওয়া বন্ধ করে দিন।

★ আয়ুর্বেদীয় মতে রক্ত পিত্তে দুর্বা ঘাস মহৌষধ। এ’রোগে মুখ, নাক ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশ দিয়ে রক্তস্রাব হতে পারে। এ’ক্ষেত্রে দুর্বা ঘাসের রসের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে খাওয়ালে রোগের উপশম হয়।

★ শ্বেতপ্রদরজনিত দূর্বলতায় দুর্বা ঘাস ও কাঁচা হলুদের রস সমপরিমাণে মিশিয়ে খেলে রোগী দূর্বলতা কাটিয়ে ওঠে।

★ আমাশয়ে দূর্বা ঘাসের রস ২ থেকে ৩ চামচ ডালিম পাতা কিংবা ডালিমের ছালের রস ৪ থেকে ৫ চামচ মিশিয়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার খান। এভাবে ১০ থেকে ১৫ দিন খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যাবে।

★ দুর্বা ঘাস শরীরের রেচনতন্ত্রের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। প্রস্রাবে কষ্ট হয় অথচ পাথুরী রোগ হয়নি এ’রকম ক্ষেত্রে দুর্বার রস দুধ ও পানি মিশিয়ে খেলে ভাল ফল দেয়। তবে অর্শরোগ থাকলে এটা খাওয়া যাবেনা।

★ দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় রোগেও দুর্বা ঘাসের রয়েছে ফলদায়ক ভূমিকা। এ’ ক্ষেত্রে দুর্বা ঘাসের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

★দুর্বা ঘাসের রস দিয়ে চুল ওঠা বন্ধ হয়। একটি পাত্রে এক লিটার নারিকেল তেল মৃদু তাপে জ্বাল করে ফেনা ফেলে নিন। তারপর দূর্বার ঘাসের টাটকা রস ২০০ মিলি সম্পূর্ণ তেলে মিশিয়ে ফের জ্বাল দিন। চুলা থেকে নামিয়ে ছেঁকে সংরক্ষণ করুন। গোসলের ১ ঘণ্টা আগে ওই তেল চুলে মাখুন। নিয়মিত ২ থেকে ৩ মাস ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে।

আলহাজ্ব আঃ কদ্দুছ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক ডা: প্রণব কান্তি সাহা বলেন,দূর্বাঘাস কার্যকরী ভেষজ। গাছ-গাছড়া কোনটায় ফেলনা নয়! জানা থাকলে প্রতিটি ঘাস, গাছ কিম্বা আগাছা ভেষজগুণে পরপূর্ণ।শারিরীক কঠিন সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি লাভ সম্ভব এর প্রয়োগ বিধি জানা থাকলে।দূর্বা ঘাসেও রয়েছে প্রকৃতিগত অসামান্য গুণ।

সতর্কীকরণ: উপরে উল্লেখিত পরামর্শগুলো অনুসরণ করার আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব্যাতিত উপরে উল্লেখিত কোন তথ্যের বাস্তবিক প্রয়োগ কাম্য নয়। ঔষধি উদ্ভিদের অপরিপক্ক ব্যাবহার স্বাস্থ্য হানিকর।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker