‘আমাদের সমাজে টাকার অকল্পনীয় শক্তি আছে’: নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জাহেদ উর রহমান
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পেছনে অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যক্তিগত ক্ষোভকে দায়ী করলেন তিনি
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান মন্তব্য করেছেন যে, আমাদের সমাজে টাকার অকল্পনীয় শক্তি আছে। তিনি বলেছেন, যারা ক্ষমতায় যাওয়ার কিছুদিন আগেও আন্দোলনে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিলেন, ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছানোর পর তাদের মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায়, যা সমাজের টাকার এই শক্তির কারণেই হয়। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও অর্থনৈতিক সংকট
ডা. জাহেদ উর রহমান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পেছনে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত ক্ষোভকে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত যাতে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ফিরে না আসে তার কথা বলি, অসংখ্য মানুষ এসবের কিছুই জানত না। শুধু ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে তারা রাস্তায় নেমেছে।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে পরিবহন শ্রমিক, হিউম্যান হলারের ড্রাইভার, হেলপারদের একটি বড় অংশ ছিল। তাদের জীবন ছাত্রলীগের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল, চাঁদাবাজির কারণে কঠিন কাজ করেও তারা টাকা রাখতে পারতেন না। এই ক্ষোভ থেকেই তারা মাঠে নেমেছিলেন।
২০১৮ সালের আন্দোলনের ব্যর্থতা ও বর্তমান সাফল্যের কারণ
২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রসঙ্গে টেনে ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, “২০১৮ সালে আমরা কেন সফল হইনি? ১৮ সালে রাস্তায় বাচ্চাদের হেলমেট পরে পিটিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের যখন পেটাল, মানুষ ক্ষুব্ধ হলো। ওর চেয়েও সেন্সিটিভ ছিল বাচ্চাকে পেটানো। সেদিন মানুষ মাঠে নামেনি কেন?”
তার মতে, এর কারণ হলো ২০১৮ সালের অর্থনীতি ২০২৪ সালের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। তিনি বলেন, “যখন আমাদের অর্থনৈতিক সংকট শুরু হলো। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ হতে শুরু করল, সেই কারণে ২৪-এ সাধারণ মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে।”
তিনি আরো বলেন, এই সরকারের সক্ষমতা নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে। এখন সংস্কারের অনেক আলাপ হচ্ছে। যদিও সংস্কারের অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে আমি মনে করি। আর একটাও যদি না হয়, তবুও আমি সন্তুষ্ট। কারণ আমাদের যে প্রতিবন্ধকতা ছিল, তাঁকে তো আমরা সরিয়ে ফেলতে পেরেছি।