জাতীয়

তিস্তার পানি বিপদসীমার ৭০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত, ৩৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি, রেড অ্যালার্ট জারি

লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়  জেলার ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ।
বুধবার (২০ অক্টোবর) সকালে তিস্তা নদীর পানি তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে বেলা ১২টায় পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর ( স্বাভাবিক বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি হতে শুরু করে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলেও পানি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষায় উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত ফ্লাড ফিউজ বিধ্বস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এটি ভেঙে গেলে তিস্তা ব্যারাজের সঙ্গে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী, পাটগ্রাম, হাতিবান্ধার সঙ্গে নীলফামারী জেলার সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চর অঞ্চলের বসতবাড়ি গুলোতে পানি উঠেছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫ উপজেলায় প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী ৬টি ইউনিয়নের বেশি ভাগ এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। ওই উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এমন দাবী করেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল।
তিস্তা ব্যারাজ’র গেজ রিডার মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, ভারতে হঠাৎ করে বন্যা দেখা দিলে তারা গজলডোবা ও ফারাক্কার বাঁধের সব গুলো জলকপাট খুলে দেয়। ফলে ভারত থেকে প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আরো কি পরিমান পানি আসবে তা ধারনা করা যাচ্ছে না।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন, উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেও পানি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর রাখছি। পরিস্থিতি অনেক খারাপের দিকে গেছে। যেকোনো সময় তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড ফিউজ বিধ্বস্ত হতে পারে। আমরা তিস্তা অববাহিকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলেছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রকার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে হাতে নেয়া হয়েছে। প্লাবিত এলাকা গুলো আমাদের লোকজন পরিদর্শন করছেন। পানি বন্দি এলাকার লোকজনকে ত্রাণ বিতরণ করার প্রস্তুতি চলছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker