জাতীয়

৭৪ বছরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা

৭৪ বছরে পা রেখেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা। আজকের এই দিনে ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর খুলনার চালনা এলাকায় এই বন্দর স্থাপিত হয়।
সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও বন্দরটি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তবে প্রতিষ্ঠান মাত্র তিন বছর পরে ভৌগোলিক কারণে ১৯৫৩ সালে কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয় বাগেরহাটের মোংলায়। প্রথম ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ ‘দ্য সিটি অব লিয়ন্স’ সুন্দরবনের পশুর নদীর জয়মনির ঘোল এলাকায় নোঙর করে বন্দরের কার্যক্রম সূচনা করে।
১৯৭৭ সালে ‘চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ’ নামে এটি একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে নামকরণ করা হয় ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’। প্রতিষ্ঠার পর নৌপথের নাব্যতা সংকট অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়।
১৯৮০ সালের পর থেকে দীর্ঘমেয়াদি ড্রেজিং কার্যক্রম চালিয়ে বন্দরটির কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নানা আয়োজন করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজিয়ে দিনটি উদযাপন শুরু করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সেরা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ টগী শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক, বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিংসহ ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোংলা বন্দর অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নেওয়া হয়েছে একাধিক মেগা প্রকল্প। পশুর চ্যানেলের ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হলে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে বন্দরের জেটি, মুরিং বয়া ও অ্যাংকোরেজে একসঙ্গে ৪৭টি জাহাজ নোঙরের সুযোগ রয়েছে। বন্দর চ্যানেলে নেভিগেশন সুবিধার জন্য ৬৯টি বয়া স্থাপন করা হয়েছে।
কনটেইনার হ্যান্ডলিং, রেফার প্লাগ পয়েন্ট, কার পার্কিং ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন বন্দরের সক্ষমতাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন ২.৩০%, কার্গো পরিবহন ৯.৭২% ও কনটেইনার পরিবহন ১৬.৭৮% বেড়েছে। এছাড়া গাড়ি আমদানিতে ১৩% প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এই বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টন কার্গো ও ৪ লাখ টিইইউজ (কনটেইনার) হ্যান্ডলিং করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর বর্তমানে শুধুমাত্র বাংলাদেশের নয়, বরং আঞ্চলিক বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রীয় হাব হয়ে উঠছে। পদ্মা সেতুর সংযোগ এবং উন্নত অবকাঠামো এই বন্দরের বাণিজ্যিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বন্দরের বর্তমান অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত করছে।
Image
বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মোংলা বন্দরের কার্যক্রম অনেক বেড়েছে। মোংলা বন্দরকে আধুনিক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বন্ধ করার জন্য আমরা নানা পরিকল্পনা করছি।
আশা করি মোংলা বন্দর এই অঞ্চলের আমদানি-রপ্তানি এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker