জাতীয়

বাংলাদেশের রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসী

জীবনটা অনেক কষ্টের প্রবাসীদের। অনেকে বলে থাকে প্র- বাঁশ-ই। কথায় কথায় বলা হয় টাকা পাঠাও, পরিবার থেকে বলা হয় টাকা পাঠাও, রাষ্ট্র থেকে বলা হয় রেমিটেন্স যোদ্ধারা টাকা পাঠাও। কিন্তু এসব প্রবাসীদের হতে হয় জাগায় জাগায় লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত।

প্রবাসীদের মূল্য কতটুকু তা দেখা গেছে গত করোনা সময়ে। কেউ যদি জানতে পারতো প্রবাসী, তাকে বসার জায়গা দিত না, তার থেকে সবাই দূরে থাকতো, শুধু দূরে থাকতো না তাকে দেখলে মুখ ঘুরিয়ে রাখত এবং সে জায়গা ত্যাগ করে চলে যেত অন্যত্র। সময় সময়ে নানা রকম ব্যাক উচ্চারিত হয়, প্রবাসীদের থেকে ‘স্বপ্ন ছিল বাঁধব ঘর,। ,প্রবাস আমায় করল পরজন্ম, জন্ম নিলাম বাংলাদেশে ঘুমাইতে হয় প্রবাসে’। প্রত্যেকটা প্রবাসীর কিছু কষ্টের কথা থাকে যেগুলো কখনো বলা হয় না বা বলতে গেলেও মনে কষ্ট লাগে।  তবু পরিবারের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রবাস জীবন পার করে দিতে হয়।

প্রবাসীরা যত কষ্টেই থাকুক না কেন বাড়িতে কারো সাথে কথা বললে সান্ত্বনার সুরে উত্তর ‘আমি ভালো আছি আমার জন্য কোন চিন্তা করো না’। কিছু কিছু প্রবাসী মানুষ আছেন যাদের জীবন এতটাই কষ্ট হয় যা ভাবা যায় না। তবু প্রবাসে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। প্রবাস জীবনের একাকিত্বতা অনেকটাই অস্বাভাবিক আর জটিল।

এই জীবনের অনুভূতি স্বাধীনতার নয় বরং পালিয়ে থাকার। প্রবাসীরা ভাবে এক জীবনের বিনিময়ে যদি পরিবারের সবার জীবন সুখে থাকে,
ক্ষতি কী? এ জীবনে হয়ত কিছু নাই পেলাম। পরকালে সুখ খুঁজে নেব। প্রবাসীদেরকে কখনো বুঝতে চাওয়া হয় না, শুধু জানে তারা টাকার মেশিন।

সকাল সাতটা থেকে পাঁচটা, ছয়টা, এমন কি রাত দশটা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। গল্প গুজব বা গান- বাজনা করে ছুটির দিন টা কাটিয়ে দেন তারা। কেননা নিঃসঙ্গতায় পরিজনের কথা মনে পড়বে, যা দুঃখ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। এর মধ্যেই তারা খুঁজে বেড়ায় ক্ষণিকের আনন্দ।
প্রবাসীদের বলা হয় রেমিটেন্স যোদ্ধা। তাদের বেতনের টাকায় সংসারে পরিবারের মুখে হাসি ফোটে।

ঘোরে দেশের অর্থনীতির চাকা। কিন্তু প্রায় শোনা যায় প্রবাসীদের করুন কথা যেমন জমা জমি নিয়ে জালিয়াতি, এয়ারপোর্টে হয়রানি, লাগেজ নিয়ে এয়ারপোর্টে লঙ্কাকাণ্ড।ব্যাংক থেকে বলা হয় সহজ শর্তে স্বল্প সময়ে প্রবাসীদের ঋণ দান কিন্তু ঋণ নিতে গিয়ে দেখা যায় কোটি জালের শর্ত প্রদান।

তাছাড়া পাদুকা কসরত আছেই। প্রবাসীরা যত টাকাই ইনকামই করে না কেন, যত সুখ-শান্তিই থাকে না কেন, তাদের চোখের কোণে একবিন্দু অশ্রু থেকেই যায়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker