জাতীয়

আ’ লীগের ইশতেহারে ১১ বিষয়ে গুরুত্ব

আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৪ ঘোষণা করেছে দলটি।

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সকাল সাড়ে ১০টার পর ইশতেহার ঘোষণা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। ইশতেহারে এবার যেসব বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো:

১. দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

২. কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

৩. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

৪. লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

৫. দৃশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো।

৬. ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

৭. নিম্নআয়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা।

৮. সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা।

৯. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

১০. সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা।

১১. সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার ঘটানো।

ইশতেহার ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ দফাগুলোর ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা একান্ত প্রয়োজন। এ জন্য ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সরকার’, ‘স্মার্ট অর্থনীতি’ ও ‘স্মার্ট সমাজ’– এ চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়া হবে।

জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হলে নীতি প্রণয়ন করে বাজারমূল্য ও আয়ের সঙ্গে সংগতি বজায় রাখা হবে। রাষ্ট্রের সবখাতে ঋণখেলাপি ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত থাকবে। কারণ আমাদের কৃষি যাতে প্রযুক্তিভিত্তিক হয় সে চেষ্টা চলছে। মৎস্য ও প্রাণিজ সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। এ জন্য সহজ শর্তে ঋণ, ভর্তুকি প্রদান করে এতে জড়িত হওয়ার জন্য যুব সমাজকে বেশি উৎসাহিত করা হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিল্পের বিকাশ ঘটানো হবে। কারণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। অন্যান্য শিল্পের মধ্যে পাট শিল্পে বেসরকারি বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া হবে।

গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদই পারে কেবল জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে। নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা আরো সুদৃঢ় করা হবে। 

এ ছাড়া, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংরক্ষণ ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানান, গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের ইশতেহার শুধু একটি দলীয় ইশতেহার নয়। এটি প্রকৃত অর্থে পুরো জাতির ইশতেহার। আসন্ন নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করছে, আওয়ামী লীগের কাছে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker