জাতীয়

দেশের উন্নয়ন তুলে ধরতে প্রবাসীদের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

বাংলাদেশকে নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলাদেশের সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) নিউইয়র্কে কুইনসে ‘সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি’ আয়োজিত ‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা এবং অনিবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বৃদ্ধিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরো বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে।

ড. মোমেন বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও অভিন্ন মূল্যবোধের ক্ষেত্র আরো শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক আরো গভীর করতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।

ড. মোমেন বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি নিপীড়ন, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি সারাবিশ্বের কাছে সাহস, আত্মমর্যাদা ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

স্বাধীনতার পর দুর্ভিক্ষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ থেকে আজকের বাংলাদেশে রূপান্তরের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশকে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, একটি উদীয়মান অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। দারিদ্র্য হ্রাসসহ আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ, আর বর্তমানে আমাদের জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।’ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাযর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন সূচকে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।

ড. মোমেন বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সময়কালে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বাংলাদেশকে উগ্রবাদ, জিহাদি এবং সন্ত্রাসের দেশে পরিণত করা হয়েছিল। সুখবর হল সেই দিন এখন শেষ হয়েছে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর, সামরিক শাসন, কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন প্রণয়ন করে খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। তখন খুনিদের বিচার না করে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে পুরস্কৃত করা হয়। 

ড. মোমেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভূমিকা তুলে ধরে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, এক কোটি ২০ লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker