জাতীয়

তিন কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা

রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে চট্টগ্রামেও রোগী কমার বিষয়ে আশার কথা বলেন তাঁরা। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা নষ্ট হয়ে যাওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার আক্রান্তদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া ও মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার—এই তিন কারণে এমন সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ব্যাপারে কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকায় পাঁচ দিনের বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হচ্ছে।

এতে এডিসের লার্ভাগুলো ভেসে গেছে। একই সঙ্গে উড়ন্ত পূর্ণবয়স্ক মশাও অনেক মারা পড়েছে। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ব্যক্তিরা অনেকে এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এতে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

এটাও পরিস্থিতির উন্নতির একটা কারণ হতে পারে। তৃতীয়ত ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুই সিটিতেই মশক নিধন কার্যক্রম আগের চেয়ে বেশ জোরালো হয়েছে। একই সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, ডেঙ্গু পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়া সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা হতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় কিছু আগে-পরে হতে পারে। বৃষ্টির কারণে যদি নতুন করে মশা জন্মাতে না পারে, তাহলে রোগীর সংখ্যা কমবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে এর সুফল পেতে আরো ২০ দিন সময় লাগতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক প্রধান কীটতত্ত্ববিদ মো. খলিলুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, যেসব জায়গায় গত কয়েক দিন ভারি বর্ষণ হয়েছে, সেসব জায়গায় মশার লার্ভা অনেকাংশে ভেসে গেছে।

আবার অনেক প্রজননস্থল তৈরিও হয়েছে। এ কারণে কিছুদিনের জন্য ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা কমবে। কিন্তু বৃষ্টি থেমে গেলে মশা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যদি না মশা নিধন কার্যক্রম চালানো হয়। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর চারটি ধরনের মধ্যে এ বছর একটি বা দুটি টাইপ দ্বারা মানুষ আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। তাদের নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে যারা আক্রান্ত হয়নি, তাদের ঝুঁকি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। বলা যায়, বৃষ্টির কারণে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহ রোগী কমবে। কিন্তু ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে তা আবার বাড়তে পারে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় পানি জমে মশার নতুন নতুন প্রজননস্থল তৈরি হয়। বিশেষ করে ছাদ ও বাড়ির আনাচকানাচে। এতে ডেঙ্গু বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য আমরা কাজের মাত্রা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছি। কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে বাড়ির মালিকদের সতর্ক করছি, যাতে তাঁরা জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করেন।’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker