জাতীয়

রাজধানীতে চার-পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং

► পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সপ্তাহখানেক লাগতে পারে
► গতকালও বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল তিন হাজার মেগাওয়াট
► চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের চাপ কম

মেঘনাঘাট, হরিপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও চট্টগ্রামের গ্যাসভিত্তিক সব বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনো চালু করতে পারেনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এতে গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াটের লোডশেডিং করতে হয় দেশের ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিকে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চার-পাঁচ ঘণ্টা এবং বাইরের জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে আট থেকে ১২ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।

ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে টানা দুই দিন মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ ছিল। সোমবার দুপুরে একটি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এতে সার্বিক গ্যাস সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। চট্টগ্রামেও গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। তবে গতকালও চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের অনেক সিএনজি ফিলিং স্টেশন চাপ কম থাকায় যানবাহনে গ্যাস দিতে পারেনি। গ্যাসের অভাবে ভুগছে শিল্প-কারখানা। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও গ্যাস সরবরাহ বাড়েনি।

বিপিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকায় বিদ্যুতের বড় অংশ আসে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। এলএনজির টার্মিনাল একটি চালু হলেও গ্যাসের চাপ কম থাকায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালানো যাচ্ছে না। চলতি সপ্তাহের মধ্যে গ্যাসের চাপ বাড়ার সম্ভাবনা নেই। গত ২৩ এপ্রিল রাত থেকে বন্ধ আছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রও। কেন্দ্রটিতে কয়লা চলে আসায় গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পুনরায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। এতে রাজধানী ঢাকার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।

এদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলোকে জানিয়েছে, আগামী ২৫ মের আগে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি পুরোপুরিভাবে স্বাভাবিক হওয়ার সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ বিতরণকারী এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান গতকাল বিষয়টি জানান।

জানতে চাইলে বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার গতকাল বলেন, ‘গ্যাসের অভাবে যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়েছিল, সেগুলো এখনো আমরা চালু করতে পারিনি। যার কারণে আমাদের প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। আশা করছি আগামী দু-এক দিনের মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু করা যাবে।’

দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানি বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। আরইবির গতকালও দিনের বেলা প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং দিয়েছে। ময়মনসিংহ, সিলেট, কুড়িগ্রাম ও কুমিল্লার বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনের মতো গতকালও তাঁদের এলাকায় গড়ে আট থেকে ১২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে নিয়োজিত দুটি প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কম্পানি (ডেসকো)। ডেসকোর গতকাল দিনের বেলা বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ৩০০ মেগাওয়াট এবং ডিপিডিসির ঘাটতি ছিল প্রায় ৪৫০ মেগাওয়াট।

গতকাল রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বাড্ডা, কুড়িল, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকার তিতাসের আবাসিক গ্রাহকরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক দিনের মতো গতকালও গ্যাসের চাপ কম ছিল। রান্না করতে গিয়ে তাঁদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker