
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উপাসনা বিষয়ক মন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো আশা প্রকাশ করেছেন যে ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস পুনরায় খোলার পর, তার দেশ ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা আরও বাড়বে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রয়ারি) সকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো: নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকায় পুনরায় মিশনটি চালু করতে পারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আর্জেন্টিনা ঢাকায় তার দূতাবাস পুনরায় চালু করতে পেরে খুশি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
আর্জেন্টিনা প্রথম ১৯৭৪ সালে ঢাকায় তার দূতাবাস খোলে। ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সামরিক জান্তা এটি বন্ধ করে দেয়। সোমবার (২৭ ফেব্রয়ারি) ঢাকার বনানীতে আর্জেন্টিনা দূতাবাস আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।
নজরুল ইসলাম জানান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “বাংলাদেশ আর্জেন্টিনার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে খুবই আগ্রহী। বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে বাণিজ্য ও পর্যটন বাড়ানোর বিশাল সুযোগ রয়েছে। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশ থেকে পোশাক ও ওষুধ সামগ্রী, পাট ও সংশ্লিষ্ট পণ্য এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে পারে।বাংলাদেশ প্রধানত ভোজ্য তেল, বিশেষ করে সয়াবিন তেল, প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ চর্বি, বীজ, ফল, শস্য, দুগ্ধজাত দ্রব্য, ডিম এবং প্রাকৃতিক মধু আমদানি করে, এই পরিধি আরো বাড়তে পারে।”
বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে আর্জেন্টিনার সহযোগিতা চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা খেলাধুলা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারি।” বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বিশ্ব অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের দাম এবং মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক উন্নত দেশ প্রভাবিত হচ্ছে।”
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে জনদুর্ভোগ লাঘব করা যায়।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ওপর জোর দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার একটি বিপণন কেন্দ্র।”
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো জানান যে তার দেশের জনগণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় গ্লোবাল সাউথ ফোরামের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা যেতে পারে।”
বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা অত্যন্ত মুগ্ধ। বাংলাদেশ এত সুন্দর হবে তা আমি কল্পনাও করিনি।”