জাতীয়

দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আজ আরো শক্তিশালী- প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পরাধীনতা থেকে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। আর আমরা দেশবাসীকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছি। যশোরের উন্নয়নে আমাদের সরকার ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পন্ন হয়েছে। যশোরে দেশের প্রথম আইসিটি পার্ক স্থাপন করে বেকার যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। আমাদের সরকার দেশের মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক ভালো। আমাদের ব্যাংকে টাকার কোন সংকট নেই। গতকালও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন দেশে রিজার্ভের কোন সংকট নেই। রিজার্ভের টাকা দেশবাসীর কল্যানে ব্যয় করেছি। আগামী দিনে আওয়ামীলীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষের দারিদ্র সীমা আরো নীচেয় নামিয়ে আনার চেষ্টা করবো। তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে দুই হাত তুলে উপস্থিত জনতাকে সমর্থন জানানোর আহবান জানালে জনগন দুই হাত তুলে নৌকা মার্কার পক্ষে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল বিকেলে যশেঅর স্টেডিয়ামে এক জনসমুদ্রে প্রধান অতিথির বক্তৃতা প্রদান করার সময় এসব কথা বলেন।

সকালে যশোর মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটিতে বিমান বাহিনীর শীতকালীন কুচকাওয়াজ পরিদর্শণ ও অভিবাদন গ্রহন অনুষ্ঠান শেস করে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে যশোর জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত যশোর শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভঅ স্থলে পৌঁছান। এসময় প্রধানমন্ত্রীর পরনে ছিল সাদা জমিনের ওপর লাল রঙয়ের ডোরাকাটা সূতি শাড়ী। প্রধানমন্ত্রীর বহনকারী গাড়িটি সভাস্থলে পৌঁছালে আগে থেকেই মে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে লাল গালিচা পেরিয়ে দৃপ্ত পদভারে মে উঠে তিনি স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে হাত নেড়ে উপস্থিত জনতাকে স্বাগত জানান।

বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষনা করেন জনসভার সঞ্চালনা করেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি। বক্তৃতা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী একটি শান্তিপূর্ণ জনসভায় উপস্থিত থাকার জন্য যশোরবাসীকে ধন্যবাদ জানান। ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান বিরোধী যে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হয়েছিল তার সফল পরিসমাপ্তি ঘটেছিল ১৯৭১ সালে মান মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভের মধ্য দিয়ে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনসাধারণ জাতির জনকের একডাকেই সাড়া দিয়ে সেদিন সেই সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিল। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও লাখো লাখো মা বোনদের আতœদানের মাধ্যমে আমরা দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর একটি স্বাধীন রাষ্ট হিসেবে বাংলাদেশকে পেয়েছিলাম। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একটি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ ও জাতি গঠনে আতœনিয়োগ করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে একটি চক্র এই দেশের উন্নয়নকে স্তমিত করে দিয়েছিল। ’৭৫ পরবর্তী দেশের সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সদস্যকে হত্যা করেছিল। এসব হত্যাকান্ডের সাথে জিয়া মোসতাক সরাসরি জড়িত ছিল। ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে কোন সরকারই উন্নয়ন করেনি। বিএনপি জামাত সরকার যখনই রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় এসেছে তখনই তারা দেশটাকে লুটপাটের কারখানা বানিয়েছে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। টাকা পাচারের ঘটনায় বিএনপি নেতা তারেক রহমান সাজা প্রাপ্ত হয়ে পলাতক জীবন যাপন করছে। বেগম জিয়া এতিমদের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাজা ভোগ করছে। সেই দলের নেতারা বলে তারা নাকি ফের এদশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। অর্থ লুটপাটকারীদের মুথে রিজার্ভ নিয়ে কথা বলা মানায় না।

তিনি বলেন, জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার পর জীবনের ঝুকি নিয়ে আমি দেশে ফিরে মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিলাম। সেই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছি। আপনাদের রায় নিয়ে আমরা বার বার ক্ষমতায় এসেছি। আর যখই আমরা ক্ষমতায় এসেছি তখন দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেছি।আর অতীতে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল তারা জাতিকে একটি ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিল। বিদেশ থেকে পুরোনো কাপড় এনে দেশের মানুষকে পরাতো। মানুষের পেটে খাবার ছিল না।মাথা গোজার ঠাঁই ছিল না, রোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। আমরা ’৯৬ সালে সরকার গঠন করে এদেশের মানুষের কল্যানে কাজ শুরু করেছি। আমরা ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের চিকিৎসার জন্য গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক করি। যেখানে আপনারা বিনা পয়সায় এখন চিকিৎসা পাচ্ছেন। বিএনপি জামাত ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালে সেই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেণ, আমরা মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছ্ িএই যশোর থেকেই অঅইটি পার্ক যুগের যাত্রা শুরু করেছিলাম। আজ যশোর আইটি পার্কে দেড় থেকে দুই হাজার যুবকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আজ মানুষের হাতে হাতে আমরা মোবাইল ফোন পৌঁছে দিয়েছি। আর বিএনপি জামাত ক্ষমতায় থেকে মানুষের হাতে তুলে দিয়েছিল অস্ত্র ,খুন আর হত্যা। যশোরে সাংবাদিক শামছুর রহমান মুকুল কে হত্যা করা হয়েছে। খুলনায় আমাদের নেতা মঞ্জুরুল ইমাম কে হত্যা করা হয়েছে। খুলনায় সাংবাদিক বালু, মানিক সাহা হত্যা করা হয়েছে। বিএনপি জামাত দেশবাসীকে হত্যা, খুন গুম উপহার দিয়েছে। নিজেরা মানুষের মুখে গ্রাস কেড়ে খেয়েছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিন খেলেছে। জিয়া যখন মারা যায় তখন ছেড়া গেঞ্জি আর ভাঙা ছুটকেস রেখে গিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। দেশের অর্থ পাচার করেছে। আজ তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। ২১ আগষ্ট গেনেড হামলা করে বিএনপি জামাত জোট আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা বার বার আমার উপর হামলা করেছে।

তিনি যশোর অঞ্চলসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরনের।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker