জিতু এলাকায় জিতু দাদা নামে পরিচিত ছিল। স্কুলে সে বেপরোয়া চলাফেরা করত। বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত। শৃঙ্খলা কমিটি বিভিন্ন সময় অভিযোগ পেয়ে জিতুকে সতর্ক করেছিল।
এসব কারণেও সে ওই শিক্ষকের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।
গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কারওয়ান বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়।
বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় গাজীপুরে অভিযান পরিচালনা করে আশরাফুল ইসলাম জিতুকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সাভারের শিক্ষক উৎপল কুমার হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি জিতু।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জিতু জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে ওই স্কুলে এক ছাত্রীর সঙ্গে ঘোরাফেরা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে শিক্ষক উৎপল কুমার তাকে প্রেষণা দেন। এই ঘটনায় সে তার শিক্ষকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ছাত্রীর নিকট নিজের হিরোইজম প্রদর্শন করার জন্য শিক্ষকের ওপর হামলা করে।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সে ২৫ জুন একটি ক্রিকেট খেলার স্টাম্প স্কুলে নিয়ে আসে এবং তা শ্রেণিকক্ষের পেছনে লুকিয়ে রাখে। এরপর তার শিক্ষককে আঘাত করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। পরে কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে শিক্ষক উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোণে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অতর্কিতভাবে আঘাত করতে থাকে। জিতু তার শিক্ষককে প্রথমে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে এবং পরে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে।
তিনি আরো বলেন, ‘স্কুল থেকে তার বিভিন্ন সনদপত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। সেখানে আমরা দেখতে পেয়েছি তার বয়স ১৯ বছর। যেহেতু মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ১৬ বছর। সেই প্রেক্ষিতে আমরা তাকে উপস্থাপন করেছি। ‘
র্যাব আরো জানায়, জিতু এলাকায় জিতু দাদা নামে পরিচিত ছিল। স্কুলে সে বেপোরায়া চলাফেরা করত। বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত। শৃঙ্খলা কমিটি বিভিন্ন সময় অভিযোগ পেয়ে জিতুকে সতর্ক করেছিল। এসব কারণেও সে ওই শিক্ষকের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।
খন্দকার আল মঈন বলেন, নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ওই কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম, চুল কাটা, ধূমপান, ইভ টিজিংসহ বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত বিষয়ে প্রেষণা প্রদান করতেন। এ ছাড়াও তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের খেলাধুলা পরিচালনা করাসহ শিক্ষার্থীদের সুপরামর্শ, মোটিভেশন ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সৃজনশীলতা বিকাশে ভূমিকা রাখতেন।