জাতীয়

‘সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের প্রভাব ঢাকায়ও আসতে পারে’

সোমবার (৬ জুন) বিকেলে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে পরিবেশ অধিদফতরের অডিটোরিয়ামে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ক সেমিনারে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এ সেমিনারের আয়োজন যৌথভাবে করে পরিবেশ অধিদফতর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।

সভার শুরুতেই সীতাকুণ্ডে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আফতাব আলী শেখ বলেন, ডিপোতে শুধু হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থাকলে এ বিস্ফোরণ ঘটতো না। আমি নিশ্চিত সেখানে অন্য রাসায়নিক ছিল এবং যার যথাযথ ব্যবস্থাপনাও ছিল না। একাধিক রাসায়নিকের মিশ্রণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, রাসায়নিক দূষণ এমন এক বিষয় এটা এক জায়গায় থেমে থাকে না। আমরা না দেখলেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আমাদের ক্ষতি করে। সীতাকুণ্ডের দূষণও ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছাবে।

বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান বলেন, উন্নত বিশ্বের দেশগুলো দূষণ করছে তার প্রভাব এখানে আসছে। এতে আমরা এশিয়ার দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী এগুলো বুঝতে পারেন বলেই আন্তর্জাতিক মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে বলেন এবং কাজ করেন। আগামী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, রাসায়নিক শরীরে ঢোকা মাত্রই শ্বাসকষ্ট, অভ্যন্তরীণ প্রদাহ, এমনকি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকলও হতে পারে। আর পরিবেশবিদরা বলছেন, ছড়িয়ে পড়া এলাকার বায়ু, পানি ও মাটি মুহূর্তেই দূষিত হবে।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. খলিলুর রহমান বলেন, সবচেয়ে খারাপ বার্ন হলো কেমিক্যাল বার্ন যা আমদের শ্বাসতন্ত্রকে আক্রান্ত করে। শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হলে এজেন্ট হিসেবে রক্তের মধ্যে গিয়ে যেমন ক্ষতি করছে তেমনি সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যে রেসপুরেটরি সিস্টেম আছে সেখানে যে বার্ন হয় সেটার রোগীর ভয়াবহতা বেড়ে যায়। তখন দেহের বিভিন্ন অর্গান ঠিকমতো কাজ করতে পারে না এতে অনেকে মারা যেতে পারে।

বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, প্রচণ্ড গরম ছিল ওখানে। ফলে যদি বাষ্প হয়ে যায় তাহলে বাতাসকে দূষিত করে। এর ফলে পরিবেশকে দূষিত করে।

গত শনিবার (৪ জুন) রাত ৮টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টায় এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাসায়নিক থাকায় একটি কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পুড়ে যায় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এক এক করে বেড়েই চলেছে। সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নয় জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন চার শতাধিক।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker