জাতীয়

থানার দেয়ালে ঢাকা পড়ছে তেঁতুলতলা খেলার মাঠ

ঢাকার কলাবাগান এলাকার তেঁতুলতলা মাঠের যে দিকটা খোলা আছে সেদিকে ৫ ইঞ্চি গাঁথুনির ৪ ফুট উচ্চতার দেয়াল তোলা হচ্ছে। ৪ ফুট দেওয়ালের উপর এক ফিটের মতো ১০ ইঞ্চির ঢালাই হবে। সেই ঢালাইয়ের ওপর দেওয়া হতে পারে কাঁটাতার বা কাঁচ। যাতে করে দেয়াল ডিঙিয়ে মাঠে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।

আজ বুধবার সরেজমিনে তেঁতুলতলা মাঠে দেখা যায়, ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজমিস্ত্রিরা। মাঠের মধ্যে আছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় পোশাক পরিহিত ২০ জনের মতো পুলিশ সদস্য দেখা যায়। সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য মাঠের মধ্যে এবং আশেপাশে দেখা গেছে। মাঠের পাশে পুলিশের ২টি ভ্যান দেখা গেছে।

তেঁতুলতলা মাঠটি মূলত খেলার মাঠ, ২ ঈদের নামাজ এবং কেউ মারা গেলে জানাজা নামাজের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মাঠের পশ্চিমপাশে রয়েছে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ছোট একটি মিনার। মাঠের ঠিক পশ্চিম দক্ষিণ কোনে রয়েছে মরদেহ গোসল করানোর একটি ঘর। কেউ মারা গেলে এই ঘরে গোসল করিয়ে মাঠে জানাজার নামাজ পড়ানো হয়।

আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের যে জায়গায় মরদেহ রেখে গোসল করানো হতো সে জায়গায় সিমেন্টের বস্তা রাখা আছে। মরদেহ গোসল করানো ঘরের সামনে বালু ও সিমেন্ট (মসলা) মেশানো হচ্ছে। এই মসলা দিয়েই চলছে ইট গাঁথুনি ও মাঠের অন্যান্য নির্মাণ কাজ।

নির্মাণ কাজে নিয়োজিত এক রাজমিস্ত্রি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাদেরকে ৪ ফিট উচ্চতার দেয়াল তুলতে বলা হয়েছে। দেয়ালের ওপর ১ ফিট সমান ১০ ইঞ্চির ঢালাই দেওয়া হবে। আজকের মধ্যে দেয়াল তোলার কাজ শেষ হতে পারে। এতে যদি সারারাত কাজ করতে হয় তাও করার নির্দেশনা আছে।’

তিনি জানান, দ্রুত কাজ শেষ করার তাগাদা আছে তাদের ওপর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাঠে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা সাদা পোশাক পরিহিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এক সদস্য বলেন, ‘আজকের মধ্যে দেয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হবে কি না জানি না। তবে দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।’

উপর থেকে কাজ বন্ধ রাখতে তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই জায়গাটি পুলিশের। পুলিশ এখানে কাজ করছে। আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা নেই। কাজ করার নির্দেশনা আছে আমরা কাজ করছি।’

মাঠ বিষয়ে আরও কিছু প্রশ্ন করলে তিনি কথা না পুলিশের উপর মহলের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

তেঁতুলতলা খেলার মাঠ রক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমাজকর্মী সৈয়দা রত্না দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মাঠ রক্ষার আন্দোলন এখন দেশবাসীর আন্দোলন। দেশবাসী সিদ্ধান্ত নেবেন এখন কী হবে। আমি এখনো আশাবাদী যে এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে, শিশুদের কথা চিন্তা করে মাঠটি ছেড়ে দেওয়া হবে।’

পুলিশ কলাবাগান থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে তার কাছে যে মুচলেকা নিয়েছিল সেখানে কী বলা ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশের কাজে বাধা দিতে পারবো না। এখানে কোনো ফেসবুক লাইভ করতে পারবো না, মাঠ সম্পর্কিত কোনো কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে পারবো না এই মর্মে আমার কাছ থেকে মুচলেকায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।’

মাঠ রক্ষায় আজ দুপুর ২টার দিকে সেখানে একটি মানববন্ধন হওয়ার কথা রয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker