দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের পর বুধবার সকাল থেকেই খুলতে শুরু করে রাজধানীর চাঁদনি চক ও গাউছিয়াসহ আশপাশের মার্কেটগুলো। আর, বিকেলের পর নিউমার্কেটের দোকান খুলতে শুরু করে। কেউ কেউ পরিস্থিতি দেখে দোকান খুলছিলেন।
এর মধ্যেই বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা কলেজ এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর দোকানও খোলেননি নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে তৃতীয় পক্ষ জড়িত ছিলো। সাংবাদিকদের ওপর হামলাসহ হতাহতের ঘটনায় সেই পক্ষকে দায়ী করেছেন তারা।
ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহবান জানিয়ে দোকান ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তাদের পক্ষ থেকেও তদন্ত কমিটি হবে এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের কাছে দেয়া হবে।
বুধবার সকাল থেকে নিউমার্কেটসহ আশপাশের পুরো এলাকায় ছিলো থমথমে পরিস্থিতি। দুপুরে দোকান খোলা হতে পারে, এমন খবর পেয়েই সকাল দশটার আগেই হাজির শত শত কর্মচারী।
এ সময় সবার কাছে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে। জানতে চেয়েছেন, করোনায় দুইটি বছরের ক্ষতির পর এবার ঈদেও তারা কি ব্যবসা হারাবেন, মিলবে তো শ্রমিক কর্মচারির বেতন-বোনাস।
নিউমার্কেটের আশেপাশের বিশটি মার্কেটে এক লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান। দৈনিক লেনদেন কমপক্ষে একশ’ কোটি টাকা।
যে ক্রেতারা এই বাণিজ্যের চাবিকাঠি, ঈদের কেনাকাটায় এসে তারা ফিরে গেছেন খালি হাতে বিরক্ত হয়ে। আর এতেই সবচেয়ে বড় শঙ্কার তৈরি হয়েছে দোকান ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দুপুর দুটায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকে দোকান মালিক সমিতি। বলা হয় এই সংঘর্ষের সুযোগ নিয়েছে তৃতীয় কোন পক্ষ।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সভপতি হেলাল উদ্দিন দাবি অভিযোগ করেন, ঠিক সময়ে পুলিশের সহায়তা পাওয়া গেলে পরিস্থিতি এতো খারাপের দিকে যেতো না।
তবে নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, তারা সমঝোতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চান। আগামীকে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে যৌথ কমিটিও চান তিনি।
সংঘর্ষের খবর সংগ্রহের সময় গণমাধ্যমকর্মীসহ যারা হতাহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসাসহ সব খরচ বহনের আশ্বাসও দিয়েছে মালিক সমিতি।
দোকান মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলনের পর নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা সাদা পতাকা উড়িয়ে দোকান খুলতে শুরু করেন। শুরু হয় ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে যান চলাচল।
এরপর বিকেল পাঁচটা দিকে ঢাকা কলেজের ভেতরে ছয়টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার শরিফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান এ খবর নিশ্চিত করেন।
এই বিস্ফোরণ কারা ঘটিয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ককটেল বিস্ফোরণের পর ঢাকা কলেজ থেকে ৬০ থেকে ৭০ জনের একটি দল বের হয়ে আসে।
পরে পুলিশের অনুরোধ ঢাকা কলেজের শিক্ষকেরা এসে শিক্ষার্থীদের ভেতরে নিয়ে যান। এ ঘটনার আধা ঘণ্টা পর এ সড়কে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
তবে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের আর দোকান খোলা হয়নি। চারটি প্রধান ফটক এখনও বন্ধ আছে। এখন মার্কেটের দোকানগুলো পরিষ্কার ও গোছগাছ করা হচ্ছে।