‘পুলিশ জনগণের যে ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করেছে তা অভূতপূর্ব। জনগণের এ আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখার জন্য সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।’ বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড: বেনজীর আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, ‘সময়ের সাথে পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই মানুষের জীবন। সময় এক বহতা নদী। সময় চলে যায়, জীবন থেমে থাকে না। সংগঠনও জীবনের ন্যায়। এজন্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে, সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।’
আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে সহকর্মীরা এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজি ড: মো: মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম, র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজি মো: মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি মো: তওফিক মাহবুব চৌধুরী এবং বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের সভাপতি পুলিশ ইন্সপেক্টর বি এম ফরমান আলী।
ড: বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশ এখন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা প্রতিনিয়ত সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।
আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা একটি ভূখণ্ড, একটি পতাকা পেয়েছি। বাঙালি পরাভব না মানা জাতি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য দেশ ও দেশের জনগণ। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক বিস্ময়। আমরা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নের বন্দরে পৌঁছাবো।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ চাকরির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এ তিনটি জায়গায় কাজ করা খুব দরকার। তিনি তাঁর কর্মকালীন সময়ে সকলের সহযোগিতায় কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগ বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কনস্টেবল পদে ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছে, যার সুফল দেশের জনগণ শিগগিরই পাবেন। তিনি এএসপি পদে নিয়োগ বিধিতেও সংস্কার আনার সময় এসেছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আগামীতে দেশের জন্য, দেশের জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা এবং সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সকলকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইজিপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান, অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজি মো. মনিরুল ইসলাম, এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজি মো. কামরুল আহসান, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর অতিরিক্ত আইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, সিআইডির কর্মকর্তাগণ এবং বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে আইজিপির কর্মকালিন সময়ের খন্ডচিত্রের ভিত্তিতে নির্মিত ২টি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে আইজিপিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকদের অভিমতের ভিত্তিতে ‘পরিবর্তনের পরিক্রমা: নাগরিক অভিমত’ এবং বিট পুলিশিংকে উপজীব্য করে রচিত ‘দুর্জয়ের ডাইরির’ দ্বিতীয় খন্ডের মোড়ক উম্মোচন করা হয়।