সপ্তাহে দুদিন বসার কথা থাকলেও চার দিন বসে এ হাট। প্রতি সপ্তাহে ২ কোটি টাকার কলা কেনা বেঁচা হয়। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কুতুবপুরে গড়ে উঠেছে কলার অন্যতম বড় হাট।
টাঙ্গাইলের সখীপুরসহ আশপাশের পাহাড়ি এলাকার কৃষকেরা কলা চাষ করে লাভবান হচ্ছে। কলার আবাদ বেশি হওয়ায় কুতুবপুরে গড়ে উঠেছে দেশের অন্যতম বড় কলার হাট। ব্যবসায়ীরা এ হাটে এসে কলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলায়।
কুতুবপুর কলার হাট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মজিবুর রহমান ফকির বলেন, এ হাটে সপ্তাহে ২ কোটি টাকার কলা কেনা বেঁচা হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাগজে-কলমে সপ্তাহে দুই দিন (রবি ও বুধবার) হাট। কিন্তু এখন শনি, মঙ্গলবারসহ চার দিন বসে এ হাট। এ হাটে উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, দাড়িপাকা, শ্রীপুর, তৈলধারা, মুচারিয়া পাথার, শালগ্রামপুর; ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি, জোড়দীঘি গ্রাম ও মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকেরা কলা নিয়ে এ হাটে আসেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যাওয়া ব্যবসায়ীরা কলা কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন। কলা বিক্রির জন্য হাটে রয়েছে সাতটি আড়ত।
আজ শনিবার সকালে কুতুবপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, সারা দেশ থেকে আসা ব্যবসায়ীরা কলা দামদর করে কিনে ট্রাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এক ব্যবসায়ী বলেন, এ বছর কলার দাম অনেকটা বেশি। প্রতি কাঁদি কলা আকার ভেদে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। এ হাটের অবস্থান মধুপুর-ঢাকা আঞ্চলিক

মহাসড়কে হওয়ায়, যোগাযোগে সুবিধা পাওয়া যায়। এ হাট দিন দিন ব্যবসায়ীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কুতুবপুর গ্রামের কলাচাষি হাশেম ভুঁইয়া বলেন, এ বছর তিনি ১৫ একর জমিতে কলা চাষ করেছেন। কলা গাছ লাগিয়েছেন ১৫ হাজার। ইতিমধ্যে তিনি ৪ হাজার কলার কাঁদি ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। আরও ৩০ লাখ টাকার কলা তিনি বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। জমির ভাড়া পরিশোধ ও খরচ শেষে তাঁর ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন।
ব্যবসায়ী ফজলুল হক বলেন, কলার কাঁদির ওপর নির্ভর করে দাম কম বেশি হয়ে থাকে। মধ্যম মানের একটি কলার কাঁদি বিক্রি হয় অন্তত ৩০০ টাকা দরে। এর চেয়ে ভালো মানের কলা বিক্রি হয় ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
আড়ৎদার আবুল কালাম মিয়া বলেন, প্রতি হাট বারে এখান থেকে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক কলা দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। কলা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ হাটে এখন সাতটি আড়ৎ গড়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, সখীপুরসহ এ অঞ্চলের মাটি কলা চাষে বেশ উপযোগী। ৩০ বছর আগে এ উপজেলায় প্রচুর কলার চাষ হতো। ১০ বছর আগে কলা চাষ কমে যায়।
কলাচাষে কৃষকরা লাভবান হওয়াতে, আবার কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। এ বছর উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার মানুষ কলা চাষের সঙ্গে যুক্ত। কলার দাম বেশী থাকায় কলা চাষীদের মুখে হাসি ফুঁটেছে।