জাতীয়

তৃতীয় দিনের পরিবহন ধর্মঘট: পথে ভোগান্তি, বাজারে আগুন

জ্বালানি তেল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার প্রতিবাদে তৃতীয় দিনের মতো পরিবহন ধর্মঘট চলছে। সড়কে চলছে না কোনো বেসরকারি বাস। তবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনা চলাচল করছে। তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

আজ রবিবার সকাল থেকেই রাস্তায় যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে কিছু বিআরটিসির বাস চলাচল করেছে। বেসরকারি বাস না চলায় সড়কের আর যাত্রীদের দখল নেয় রিকশা, সিএনজি, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল। অ্যাপের বদলে বেশির ভাগ মোটরসাইকেল খ্যাপে চলছে। ধর্মঘটের কারণে অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনায় নেওয়া হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায়ই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান, কাভার্ডভ্যানে চড়েও যাচ্ছেন কর্মস্থল ও গন্তব্যে।

সড়কে পরিবহন সংকটে যাত্রীর চাপ গিয়ে পড়েছে ট্রেনের ঘাড়ে। ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সুযোগ না থাকলেও বেড়েছে যাত্রীর চাপ। যদিও করোনার শুরুতে বন্ধ হওয়া ট্রেনের ‘স্ট্যান্ডিং’ টিকিট বিক্রি এখনো চালু হয়নি। তবুও আন্ত নগরের অবস্থা তুলনামূলক কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রীর চাপে বেসামাল কমিউটার ট্রেন।

এদিকে, খরচ বৃদ্ধি ও ঝুঁকির অজুহাতে পণ্য পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে পণ্যের বাজারে। বিশেষ করে সবজির সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় দাম বেড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। প্রতিটি নিত্যপণ্য কিনতে ক্রেতাকে বাড়তি ৫ থেকে ১০ টাকা গুণতে হচ্ছে।

যে সাইজের ফুলকপি দুইদিন আগে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাঁধাকপি প্রতিটি আকারভেদে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা একদিন আগেও ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।

এ ছাড়া, গাজরের কেজি ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মূলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ো ৬০ টাকা ও করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। কাঁচামরিচ বাজারভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চড়া পেঁয়াজের দামও। দুইদিন আগে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫০-৫৫ টাকায় পাওয়া গেছে। একই মানের পেঁয়াজ এখন ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সাধারণত শীতের মৌসুমে সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যায়। মাত্র শীতের সবজি বাজারে আসছে। দামও কমের দিকে যাচ্ছিল। এমন সময় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে দাম আরো বাড়বে এবং মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

এর আগে বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। এরপরই শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে পরিবহন মালিকরা তেলের দাম কমানো বা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেন। অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিনে শুক্রবার কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশ। ঘর থেকে যারা বের হয়েছেন, তারা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। পথে পথে ছিল দুর্ভোগ। শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker