দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা স্থগিত; নিরাপত্তাহীনতায় কূটনীতিকরা
চরমপন্থীদের বিক্ষোভ ও হুমকির মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কনস্যুলার সার্ভিস
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে সব ধরনের কনস্যুলার এবং ভিসা সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। মিশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক কিছু ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনার প্রেক্ষাপটে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক জরুরি নোটিশের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানায় হাইকমিশন কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে।
সোমবার দিল্লির বাংলাদেশ মিশনের প্রধান ফটকে ঝুলানো ওই নোটিশে বলা হয়, অনিবার্য পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে কনস্যুলার ও ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সাময়িক অসুবিধার জন্য মিশনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
বিক্ষোভ ও নিরাপত্তা শঙ্কা:
গত শনিবার ও রবিবার (২০-২১ ডিসেম্বর) দিল্লির কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উগ্রপন্থী একটি সংগঠনের ২৫-৩০ জন সমর্থক দফায় দফায় বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বাংলাদেশিদের ভারত ছাড়ার স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের হাইকমিশনারকেও হুমকি দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অতি সুরক্ষিত এই কূটনৈতিক অঞ্চলে কীভাবে বিক্ষোভকারীরা পৌঁছাতে পারল, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে ঢাকার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “দিল্লির কূটনৈতিক এলাকার ভেতরে বাংলাদেশ মিশনের অবস্থান অত্যন্ত সুরক্ষিত একটি স্থানে। সেখানে হিন্দু চরমপন্থীরা কীভাবে প্রবেশ করার সুযোগ পেল, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এটি কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।” তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পর থেকে দিল্লিতে অবস্থানরত হাইকমিশনার এবং তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতা ও হুমকির মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারে হামলা এবং আসাম ও কলকাতায় কুশপুত্তলিকা দাহ করার মতো ঘটনার পর দিল্লির মিশনে এই নিরাপত্তা সংকটের সৃষ্টি হলো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।