জিয়াউর রহমানকে কোনো একক দলের ভাবা উচিত নয়: সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে কোনো নির্দিষ্ট দলের গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখা ঠিক নয়; তিনি আশা করেন বিএনপি সেই ভুল করবে না, যা আওয়ামী লীগ করেছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে শুধু কোনো একক দলের ভাবা উচিত নয়, আশা করি বিএনপি সেই ভুল করবে না, যেটি আওয়ামী লীগ করেছে।”
তিনি বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ওপর অনুষ্ঠান, তাই শুধুমাত্র বিএনপির লোকজন কথা বলবে—এই রকম সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ভিন্ন দল ও মতের মানুষকে জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে দিতে হবে।”
গতকাল (শুক্রবার, ৩০ মে) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। জিয়া স্মৃতি জাদুঘর-চট্টগ্রাম এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ খুব সীমিত উল্লেখ করে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “আমাদের সরকারের মেয়াদ খুব সীমিত, তাই আমাদের পক্ষে খুব বেশি পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। তাই আমরা সীমিত পরিসরে কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। এ কারণেই আমরা সংস্কৃতিকে পরিবর্তনের জন্য জিয়াউর রহমানের জীবনীর ওপর গুরুত্বারোপ করেছি।”
তিনি বলেন, “আমরা নববর্ষে শুধু বাঙালি না, চাকমা, মারমা, গারো, সাঁওতাল—সবাইকে একসাথে নিয়ে পালন করার চেষ্টা করেছি। চাঁদরাতে ঈদ উৎসব পালন করেছি, যেটি দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে হয়নি। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ঢাকাসহ আরও পাঁচ জেলায় সাংস্কৃতিক উৎসব পালন করা হয়েছে। এটি সামনের দিনেও বিদ্যমান থাকবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা সংকীর্ণমনতা থেকে বের হতে পারছি না, যেটি ৭০-৮০’র দশকের রাজনীতিবিদরা অনুধাবন করেছিলেন। জিয়াউর রহমান যদি আর ৩-৪ বছর বেঁচে থাকতেন, তাহলে দেশে সাংস্কৃতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ পূর্ণতা পেতো।”
স্বাগত বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, যেখানে জিয়াউর রহমানের নাম ঝলমল করছে। উনি অনেক মিতব্যয়ী প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। মৃত্যুর আগের দিন রাতে উনি এমন একটি টুথপেস্ট ব্যবহার করেছেন, যেটিতে টিপতে টিপতে একদম শেষ পর্যায়ে ছিল পেস্ট।”
এ সময় আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্যান্য আলোচকরা বলেন, “আজকের দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় অশ্রুসিক্ত দিন। উনি ৪৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেও উনার আদর্শ মানুষের ভেতরে বপন করে গেছেন। উনার আদর্শ আমাদের সামনে চলার পথ দেখায়। গত ১৬-১৭টি বছর ফ্যাসিস্ট রেজিম তাদের চৌদ্দগোষ্ঠীকে মানুষের কাছে তুলে ধরেছে, সেক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান এবং উনার পরিবারের কাউকে সামনে আনেননি। বিগত সরকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চরিত্র হরণ করতেই ব্যস্ত ছিলেন।”
এ সময় আলোচনায় অংশ নিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, স্বাস্থ্য এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, বিডিজবস.কম এর প্রধান নির্বাহী একেএম ফাহিম মাশরুর, রাজনীতিবিদ সরোয়ার তুষার, কবি ও চিন্তক রেজাউল করিম রনি প্রমুখ।